ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুলুল্লাহ ইউনিয়নের উত্তর দাররা গ্রামে গৃহবধূর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে ওই নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার এ ঘটনায় গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। একইসঙ্গে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২১ মার্চ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশিত খবরে জানা যায় যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রসুলুল্লাহ ইউনিয়নের উত্তর দাররা গ্রামে গৃহবধূর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ওই নারী।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ একই এলাকার জাকারিয়ার স্ত্রী। জাকারিয়া দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছিলেন। দেড় বছর আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি। জাকারিয়ার ছোট ভাই জালাল তার ভাইয়ের বাসায় থেকে কলেজে পড়াশুনা করে। কয়েকদিন আগে জালালের সঙ্গে ঘটনার শিকার গৃহবধূর কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় জালাল। গত ১৯ মার্চ দুপুরে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ঘরে পিঠা তৈরি করছিল। এ সুযোগে জালাল পিছন থেকে এসে তার ভাবির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। গত ২২ মার্চ দুপুরে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভুক্তভোগী মারা যান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা লক্ষ্য করছি যে, পারিবারিক সহিংসতা দিন দিন নৃশংস ও উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গৃহবধূর শরীরে পেট্রোল দিয়ে আগুনে দিয়ে ঝলসে দেওয়া এবং নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। নারী ও কন্যারা ঘরে বাইরে প্রতিনিয়ত নৃশংসতার শিকার হচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা হুমকি মুখে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের ঘটনা নারীর চলমান অগ্রযাত্রায়, কর্মজীবন, স্বাধীন চলাচল ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকেও নাজুক করে তুলেছে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এ ঘটনায় জড়িতের দ্রুত গ্রেফতার, মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষায় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।