
অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র পরিষদের অবস্থান কর্মসূচি রাজু ভাস্কর্যে বাস্তবায়িত হয়েছে । ছাত্র পরিষদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ডাকসু ভবনের সামনে ছিল। কিন্তু সেখানে ছাত্রলীগের কর্মীরা স্টাম্প, ব্যাট হকিস্টিকসহ অবস্থান করে হামলার উদ্দেশ্যে। ছাত্র পরিষদ পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কর্মসূচি পালন করে। রাজু ভাস্কর্যেও অবস্থান কর্মসূচির সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা এসে ঘেরাও করে এবং আমাদের কিছু সদস্যদের হেনেস্তা করে। পরবর্তীতে ছাত্র পরিষদ একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগের এই হীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় ছাত্র পরিষদ।
ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, আজকে প্রমাণিত হয়ে গেলো ডাকসু কেন হয়না! ডাকসু হলে ছাত্রলীগ কোথাও জিততে পারবে না। লোক লজ্জায় মিডিয়ার সামনে তারা ডাকসু চায় বললেও ডাকসুর দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগেই তারা ডাকসু ভবনের সামনে ক্রিকেট ব্যাট, স্টাম্প , লাঠি সোঠা নিয়ে অবস্থান নেয়। আমরা অবস্থান পরিবর্তন করে রাজুতে দাড়ালে সেখানে এসে বাইক দিয়ে হর্ণ বাজানো, গিয়ার দিয়ে শব্দ দূষণ করা, অশ্রাব্য কটুক্তি করে শ্লোগান দিয়ে বাধাগ্রস্ত করে। ছাত্রলীগ সারাদেশে শিক্ষাঙ্গণে যেভাবে র্যাগিং সেক্সুয়াল হেরাসমেন্ট, ছিনতাই, চাদাবাজী সহ অপরাধ অপকর্মের ক্যান্সারে রুপান্তরিত করেছে তাই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীরা যে তাদেরকে প্রত্যাক্ষাণ করেছে তা আরো সুস্পষ্ট হবে।আর এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখেছে এজন্য যেন ছাত্রলীগের মাধ্যমে একচ্ছত্রভাবে ক্ষমতাসীনদল ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। ডাকসু হলে ক্ষমতাসীনদের প্রভাব ক্ষর্ব হবে। ভিসি মহোদয় বললেন, এখন ডাকসু হলে জাতীয় রাজনীতির প্রভাব পরবে। এটিত মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলার মতো কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ ডিসেম্বর পালন করা হয়, ২৬ মার্চ পালন করা হয়, জাতীয় রাজনীতির সকল ঘটনাই পালন করা হয়। তাহলে ডাকসু বন্ধ রেখে উনি কিসের প্রভাব থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মুক্ত রাখতে চাচ্ছে। আজ ক্ষমতাসীনদের দলীয় কুপ্রভাবেই ডাকসু বন্ধ আছে এটাই সত্যি। তাই দলীয় রাজনীতির কুপ্রভাব থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত রাখতে হলে, পেশিশক্তি ও কালো টাকার রাজনীতি মুক্ত শিক্ষামঙ্গন তৈরী করতে হলে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন এর বিকল্প নেই। আর ছাত্র রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হলে সেটিই জাতীয় রাজনীতিকে পথ দেখাবে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় দলীয় জাতীয় রাজনীতি ছাত্ররাজনীতিকে কলুষণ মুক্ত করবে সেই আশা আমরা ছাত্ররা করতে পাচ্ছি না।শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেহেতু ছাত্র অধিকার পরিষদের জন্য হয়েছে ডাকসু আদায় করার জন্য আরো রক্ত দিতে সেজন্য ও প্রস্তুত আছি।
ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘ডাকসু শিক্ষার্থীদের বৈধ প্লাটফর্ম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র ত্রাস বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। কারন নির্বাচন হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে ভোট দিবে না। সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে সবথেকে বড়ো বঞ্চিত অংশই হলো শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি সব নির্বাচন হয়, হয় না শুধু ডাকসু নির্বাচন। অথচ শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই ছাত্র সংসদের জন্য ফি দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ডাকসুই শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়, ঐচ্ছিক কিছু নয়। ডাকসু নির্বাচন না করাটা প্রশাসনের নৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতা শুধু শিক্ষার্থীদেরই অবহেলিত রেখেছে। তাই, আমাদের দাবি হচ্ছে, অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। যদি তা না হয়, তবে ছাত্রদের সাথে সর্বাত্মক আন্দোলন যাওয়া হবে। প্রয়োজনে আমরা আদালতের দারস্থ হবো।
কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিজ্ঞান সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট, ঢাবি শাখার সেক্রেটারি আহনাফ খান সাঈদ, যুগ্ম সম্পাদক নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।