চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের সমুদ্র উপকূল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলছে পুকুর-দীঘি ভরাটের মহোৎসব।উপজেলার কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে ফেরিঘাট ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যে কোন সময়ে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।কোন কোন ক্ষমতাসীন নেতা,শীপ ইয়ার্ড মালিকরা স্হানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এমনটি করছেন বলে দাবী সাধারণ মানুষের। কুমিরা,আকিলপুর বীচ, বাড়বকুণ্ড, গুলিয়াখালী সী-বিচসহ উপজেলার কতক এলাকায় বালু উত্তোলন চলছে বলে জানা যায়।
বালু উত্তোলন বিষয়ে(ওডব্লিউ শিপব্রেকার্স) মালিক মহসিন রেজা জানান,পাইপ বসিয়ে ড্রেজার দিয়ে সাগর থেকে বালু উত্তোলনের জন্য নৌ- মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নেয়া হয়েছে।তবে যে ডুকুমেন্টস তিনি পাঠিয়েছেন তা নৌ-মন্ত্রনালয়ের নয়।এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও তিনি দেখাতে পারেননি।
সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পন্হিছিলা নামক স্হানে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে শত-শত বছরের পূরনো সাগর দীঘি নামে খ্যাত বিশাল পুকুরটি রাতে দিনে ভরাটের কাজ চলছে প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে। এ বিষয়ে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদিউল আলম জসীমকে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান,এটি দীঘি বা পুকুর নয়,নালজমি।ভরাট করতেছেন এস আলম গ্রুপ।দেখাশোনা করছি আমি। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বদিউল আলম জসীম একদিন সময় নেয়। পরে আর যোগাযোগ করেননি।
সম্প্রতি কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদ চৌধুরী বলেন,অবৈধ বালু উত্তোলনের ব্যাপারে আমি নিজে ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েছি, প্রশাসনের দৃস্টি আকর্ষণ করি এমনকি উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায়ও জানিয়েছি তারপরও কেন বন্ধ হচ্ছে না সে বিষয়টি আমার জানা নেই।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম উপ-পরিচালক (ডিডি) ফেরদৌস আনোয়ার বলেন,সমুদ্র থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, ফসলি জমি কেটে মাটি বিক্রি বা ভরাট, পুকুর বা দীঘি ভরাট এগুলে কখনোই সরকার অনুমতি দেবে না। এসমস্ত বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন ইউএনও – এসিল্যান্ড। তিনি বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যে সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এহেন গর্হিত কর্মকান্ড চালায় তাদের বিরুদ্ধে স্হানীয় প্রশাসনের এগিয়ে আসা উচিত।
এই দিকে কুমিরা,আকিলপুর,গুলিয়াখালী, সাগর দীঘি আরো ছোটবড় জমি কেটে মাটী বিক্রিকারী মাটী খেকোদের কারনে অচিরে এসমস্ত এলাকাগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাবে, বিলিণ হবে কুমিরা আলেকদিয়া, গুলিয়াখালীসহ বহু গ্রাম। নদীগর্ভে বিলীন হবে এসব গ্রামগুলো।
সরেজমিনে গেলে সাধারণ মানুষ ক্ষোভের সাথে বলেন, স্হানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্হানীয় প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন আন্তরিক ও দায়িত্ববান হলে অবৈধ বালু উত্তোলন, ফসলি জমি কেটে মাটী বিক্রি,পুকুর বা দীঘি ভরাট কখনোই সম্ভব নয়।এবিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃশাহাদাত হোসেন জাসান,যেখানেই অভিযোগ পাওয়া যাবে আমরা অভিযান চালাবো।ইতিমধ্যে আমরা অভিযোগ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি।তিনি বলেন,সংবাদকর্মীরা লিখলে আমাদের অভিযান চালাতে সুবিধা হয়।