গত কয়েকদিন ধরে বয়ে যাচ্ছে ঠাণ্ডা বাতাস ও শৈত্যপ্রবাহ। এমন পরিস্থিতিতে যশোরের মণিরামপুরের মানুষের পাশাপশি কাহিল গবাদিপশু গুলো। চলমান প্রচন্ড শীতে গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে আছেন খামারিসহ প্রান্তিক কৃষকরা। প্রাণি চিকিৎসকরা বলছেন, এমন প্রতিকূল আবহাওয়ায় গবাদিপশুর বদহজম ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয়ে সারাদিন ঠাণ্ডা ছিলো বেশি। গত কয়েক দিন ধরে রোদের দেখা মেলেনি মণিরামপুরের রাজগঞ্জ অঞ্চলে। তারপর বয়ে যাচ্ছে ঠাণ্ডা বাতাস। এতে শীতের প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চলছে। শনিবার (০৭ জানুয়ারি-২০২৩) দুপুর ১২টায় ৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সরেজমিনে মণিরামপুরের রাজগঞ্জের কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শীতের এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় গবাদিপশুগুলোকে পুরনো কাঁথা-কম্বল, ছালার চট, পুরনো জামা, সোয়েটার এবং যার যা আছে তাই দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন মানুষ। তবে সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে ঝাঁপা বাঁওড় ও কপোতাক্ষ নদ পাড় অঞ্চলের গবাদিপশুগুলোর। ঝাঁপা বাওড় পাড়ের কৃষক বাদশা মিয়া জানান, প্রচণ্ড শীত, সেই সাথে ঠাণ্ডা বাতাসে গরু-ছাগল নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে কিছু গরু ও ছাগলের গায়ে চট দিয়েছি। অনেকেই ছেড়া কাঁথা-কম্বল গায়ে জড়ায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। ঝাঁপা গুরুপাটনির ঘাটের কৃষক বিমল জানান, এই শীতে সব থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে গরু বাছুরের। মানুষের ঠাণ্ডা লাগলে বলতে পারে। কিন্তু গবাদিপশুরা তো বলতে পারে না। তাই ছালার চট তাদের গায়ে দিয়ে রেখেছি। হানুয়ার গ্রামের বিল্লাল হোসেন বলেন, আজ থেকে ১৫দিন আগে যে গরুর ওজন ছিলো ৩ মন, এখন সেই গরুর ওজন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ কেজি কমে গেছে। এতো শীতে গবাদিপশুর শরীর ভালো থাকে না। এমন প্রচণ্ড শীতে গরু ছাগলের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে গবাদিপশুগুলো কাহিল হয়ে যায়। এদিকে রাজগঞ্জ অঞ্চলের খামারিরাও, খামারে গরু নিয়ে চরম আশঙ্কায় রয়েছে। স্থানীয় প্রাণি চিকিৎসরা এ বিষয়ে বলেন, ঠাণ্ডায় গবাদিপশুর ক্ষুধামান্দ্য ও নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমরা গবাদিপশুর মালিকদেরকে, গবাদিপশুগুলোকে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচাতে গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা ও লাইটের নিচে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি এবং সাথে সাথে দানাদার খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।
###