মা খালেদা বেগমকে বাঁচাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) নিজেকে শ্রমিক হিসেবে ১০ বছরের জন্য ‘বিক্রি’র ঘোষণা দিয়েছেন ছেলে মো. আনোয়ারুল ইসলাম মামুন। মামুন বান্দরবান সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
জানা গেছে, চার মাস আগে তার মায়ের জরায়ু ক্যানসার শনাক্ত হয়। সেই ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে। বাম পাশের একটি কিডনি সম্পূর্ণ নষ্ট। ডান পাশের কিডনি চালু রাখতে বসানো হয়েছে পাইপ। এর ওপর আরো শনাক্ত হয়েছে টাইফয়েড। চলছে কেমোথেরাপি। গত চার মাসে খরচ হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। বৃদ্ধ পিতার জায়গা-জমি যা ছিল তা-ও শেষ। বেশির ভাগ টাকাই ধার করে সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন আর কেউ ধারও দিতে চায় না। সহায় সম্বল বলতে আর কিছুই নেই। অর্থসংকটে পড়ে নিজেকে শ্রমিক হিসেবে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন মামুন।
মামুন বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী পাড়ার মো. নুরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। বাবা বৃদ্ধ। আগে কৃষিকাজ করলেও বয়োবৃদ্ধের কারণে এখন তা আর পারেন না। পড়ালেখার খরচ জোগাতে জেলা সদরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করত মামুন। মায়ের দীর্ঘ অসুস্থতায় পাশে থাকার কারণে গত এক মাস আগে বেসরকারি চাকরিটাও চলে যায়।
মামুন বলেন, মায়ের জন্য আমি সব করতে পারি। গত ছয় বছর ধরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। লেখাপড়া, ঘরভাড়াসহ মায়ের চিকিৎসা করিয়েছি। বৈধ উপায়ে আমি যে কোন কাজ করব। তবে এখনো কোন কাজের সন্ধান পাইনি। কেউ কিনে নিতে এগিয়ে আসেননি। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি তার বাসভবনে ডেকে নিয়ে মায়ের খোঁজখবর নেন এবং ১ লাখ টাকা চিকিৎসার জন্য দেন। এছাড়া বিভিন্নভাবে সহায়তার মাধ্যমে আরো ২৫ হাজার টাকার মতো পেয়েছি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান মামুন।
আলীকদম সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, মামুন আমার পরিচিত। সমাজের বিত্তবানদের তার পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে তিনি মনে করেন।