মানব উন্নয়ন সূচকে আরও দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের সমীক্ষায় ১৩৩তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন পঞ্চম। তবে পরিবেশের প্রভাবজনিত সমন্বিত মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী আরও ৯ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। রিপোর্টটি সোমবার পরিকল্পনা কমিশনে আন্তর্জাতিকভাবে উন্মোচনের ছয় দিন পর বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। মানব উন্নয়ন সমীক্ষা ২০২০-এর এই বছরের শিরোনাম ‘দ্য নেক্সট ফ্রন্টিয়ার: হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এনথ্রোপোসিন’। মানব উন্নয়ন সূচকের মাধ্যমে মূলত একটি দেশের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবনযাত্রার সামগ্রিক অবস্থা পরিমাপ করা হয়, তবে এবার মানব উন্নয়ন সমীক্ষা প্রবর্তনের ৩০তম বার্ষিকীতে দুটি বিষয় নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে- কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা ও মোট ব্যবহৃত সম্পদের পরিমাণ। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান রিপোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন এবং বলেন, বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় সব সময় গুরুত্ব দিয়েছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশে করোনা মহামারীতে এখনও পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করলেও প্রাণহানির পাশাপাশি সামগ্রিক প্রভাব আরও অনেক বিস্তৃত ও প্রকট। বহু পরিবার জীবিকা হারিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে, আয় অসমতা বেড়েছে ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে এবং লেখাপড়া থেকে দীর্ঘ বিরতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। অনুষ্ঠানে ইউএনডিপির সিনিয়র ইকোনমিক অ্যাডভাইজার বালায় হোভার্থের সমন্বিত মানব উন্নয়ন সূচক সম্পর্কিত একটি প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করা হয়। রিপোর্টে আর বলা হয়েছে, মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জন অসাধারণ। ১৯৯০ হতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত, মানব উন্নয়ন সূচক ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের সূচকের মান মধ্যম সারির দেশগুলোর গড় মানের চেয়ে বেশি ছিল। ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সাল নাগাদ বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়েছে ১৪.৪ বছর, গড় শিক্ষাকাল বেড়েছে ৩.৪ বছর এবং প্রত্যাশিত শিক্ষাকাল বেড়েছে ৬ বছর। এ ছাড়া এই সময়ে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণও বেড়েছে প্রায় ২২০.১ শতাংশ।