বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের বুকে অপরূপ সৌন্দর্যের একমাত্র দ্বীপ ’সেন্টমার্টিন’। দেশের পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান আকর্ষনীয় স্থান সেন্টমার্টিন। মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক যায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। কিন্ত টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া জাহাজ যখন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পৌঁছে তখন মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়তে হয় পর্যটকদের। জেটির বেহাল অবস্থার ঝুঁকি নিয়ে উঠতে হয় দ্বীপে। ভাঙা জেটিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পর্যটকদের। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও জেটির উন্নয়ন বা সংস্কারে সরকার এগিয়ে আসেনি। এতে শুধু পর্যটক নয়, স্থানীয়দের মধ্যেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি পর্যটক নিয়ে ৭ থেকে ৮ টি জাহাজ যায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। পাশাপাশি সেন্টমার্টিন স্থানীয়রাও যাতায়ত করতে হয় একটি মাত্র জেটি থেকে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় সব চাপ পড়ে জেটির উপর। সূত্র মতে ২০০৪ সালে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল সেন্টমার্টিন জেটি। ২০০৬ সালের ১৫ জুন জেটি চালু হয়। এরপর বেশ কয়েক বছর ভালোভাবে পর্যটক ও স্থানীয়রা যাতায়াত করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে জেটির বেহাল দশা সৃষ্টি হয়। শুরু হয় ভাঙন। জেটির রেলিং, গাইড বিম, স্পিং বিম ভেঙ্গে সাগরের বুকে চলে যাচ্ছে। জেটির নিচে বেশির ভাগ ভেঙ্গে গিয়ে জেটির বড় বড় রড গুলো দেখা যাচ্ছে। ফলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক সময় সাগরের পানির উচ্চতা ও ঢেউ বৃদ্ধি পেলে জেটির উপর আঘাত হানে। দীর্ঘদিন ধরে এই জেটিতে কোন সংস্কার বা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। স্থানীয়রা জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান পেশা এখন পর্যটন ব্যবসা। পর্যটক আসলে ছোট ছোট দোকান দিয়ে ডাব, চা, পান সহ ইত্যাদি জিনিসপত্র বিক্রি করে টাকা আয় করে। এই পর্যটন ব্যবসার আয় নিয়ে পুরো বছর জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদের। কিন্তু এখন সেন্ট মার্টিন জেটির ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখলে দ্বিতীয়বার কেউ আসতে চায় না। ফলে দিন দিন পর্যটক কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বাসী সরকারের কাছে এই ঝুঁকিপূর্ণ জেটি সংস্কার করার জোর দাবি জানিয়েছেন।