মনিরামপুর উপজেলার পারখাজুরা বাঁওড়ের ১২৭ একর কোনোরকম ইজারা ছাড়াই ভোগদখল করে আসছে একটি চক্র।
কতিপয় সরকারি কর্মচারীকে ম্যানেজ করে ৪৮ বছর ধরে মশ্মিমনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও এলাকার প্রভাবশালী চক্র বাঁওড়ের বড় একটি অংশ দখলে রেখেছে। তবে একই বাঁওড়ের ২৩০ একর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জরিপ করে ইজারাবিহীন ৩৬ দশমিক ৫ একর জলকর চিহ্নিত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাকিমপুর পারখাজুরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অসিত কুমার বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার মণ্ডল অভিযোগ করেন, মনিরামপুর উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নের বাঁওড় খাজুরা মৌজায় জলকর ৪৫৭ দশমিক ৫ একর জমি রয়েছে।
এর মধ্যে ২০১৬ সালের ২১ জুন ভূমি মন্ত্রণালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাৎসরিক ১ লাখ ২১ হাজার ৬০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করে ৬৫ একর জলকর মশ্মিমনগর মৎস্যজীবী সমিতির নামে ইজারা দেয়া হয়।
কিন্তু আরও ১৬৫ একর মজিদ মহলদার নামে এক ব্যক্তির নামে ১৯৭২ সালে ৫১ বছর মেয়াদে লিজ দেয়া হয়। কিন্তু মজিদের নামে বন্দোবস্তের নথি জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। প্রায় ১০০ একর জমি ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেয়া হয়। বাকি ১২৭ একর জমি বন্দোবস্তবিহীন। অভিযোগ, মশ্মিমনগর সমবায় সমিতি ও মজিদ মহলদারের উত্তরসূরিরা ২৩০ একর জলকরের রাজস্ব পরিশোধ করেন।
অথচ তারা পুরো বাঁওড়ে মাছ চাষ করেন। সমিতির কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেননি। চুক্তিনামা ছাড়াই সমিতি জলকর ভোগদখল করছে। ৪৮ বছর ধরে মশ্মিমনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও মজিদ মহলদার এবং তার উত্তরসূরিরা বাঁওড়ে মাছ চাষ করছেন। ১২৭ একর বাঁওড়ের রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে সরকার। একইসঙ্গে এলাকার প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে প্রভাবশালীদের জিম্মায় বাঁওড় পরিচালিত হচ্ছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে মশ্মিমনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, আমরা ইজারা নিয়ে বাঁওড়ে মাছ চাষ করি। এখানে ইজারাবিহীন জলকর ছিল বলে আমাদের জানা ছিল না।
আমরা পুরো বাঁওড়ে মাছ চাষ করি। সর্বশেষ জরিপে ইজারাবিহীন ৩৬ দশমিক ৫ একর জলকর পেয়েছে সরকার। এ জায়গাও ইজারা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিবছর জেলা প্রশাসনের চিঠির ভিত্তিতে ইজারামূল্য সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছি। ইজারা বাতিল হয়নি।