মিয়ানমার থেকে২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সেনাবাহিনী নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় অনেকে সাগরে নৌকা ডুবে মারা যান,কেউ উপকূলে নৌকাডুবি হয়ে মা বাবা কে হারায়। ৭ হাজার শিশু মা-বাবা ছাড়া জীবন যাপন করতেছে। রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের নিয়ে কাজ করছে সরকার। কক্সবাজারের উখিয়া ও গত ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী থেকে টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় চালু করা হয় রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প। ইউনিসেফ এর সহযোগিতায় এসব এতিম শিশুদের ভরণপোষন করা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিকসহ নৈতিকবান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান ‘রোহিঙ্গা শিশু সুরক্ষা কার্যক্রম’ প্রকল্পের অলটারনেটিভ ফোকাল পয়েন্ট ও সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন জালালী। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের আগষ্ট থেকে এতিম রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে জরিপ শুরু হয়। জরিপে প্রায় ৩৯ হাজার শিশুর মধ্য হতে ২০২০ সালের আগষ্ট পর্যন্ত ৩০ হাজার ৭৪৩ জন শিশুর তথ্য যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। জরিপে ৩২টি ক্যাম্পে মোট ৭ হাজার ৫৪ জন। তার মধ্যে যাদের মা-বাবা উভয়ই মৃত এমন এতিম শিশুর সংখ্যা ৫ হাজার ৫৮৪ জন। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশু রয়েছে ১ হাজার ১১০জন, পরিবারে কেউ নেই এমন শিশুর সংখ্যা ৫৬ জন। শিশু নিজেই পরিবারের প্রধান এমন শিশু রয়েছে ২৫০ জন। মা-বাবা থাকলেও খবর নেই এমন অবিচ্ছিন্ন শিশু আছে ৫৮ জন। এতিম ছাড়াও প্রতিবন্ধী, দুস্থ, অসহায় এবং নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদেরও ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। তার মধ্যে প্রতিবন্ধী শিশুর ৮৩৯ জন, পিতা বা মাতা প্রতিবন্ধী এমন শিশু ১৮১ জন ও শিশুসহ বাবা-মা দীর্ঘস্থায়ী নানা রোগে আক্রান্ত শিশু শনাক্ত করা হয়েছে ৪২ জন। এই প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে আরও দেড় হাজার দুস্থ, অসহায়, এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুকে তালিকাভুক্ত করা হবে। প্রকল্পের অলটারনেটিভ ফোকাল পয়েন্ট ও সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ আল-আমিন জালালী আরও বলেন, তাদের সমাজকর্মীরা রোহিঙ্গাদের ঘরে ঘরে গিয়ে বিভিন্ন সেবা পৌঁছে দিয়ে আসছে। জরিপে বিভিন্ন শ্রেণীর ৭ হাজার ৫৪ জন রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকা অনুযায়ী ওইসব রোহিঙ্গা শিশুদের ভরণপোষনের জন্য প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে নগদ টাকা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে এই টাকা বিতরণ করা হয়।