সাভারে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনকে আটক করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে সাভারের বিরুলিয়া এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। পরে গতকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আটক ইউপি চেয়ারম্যান বিরুলিয়ার কাকাবো এলাকার মৃত আতানুল্লার ছেলে। তাঁকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। পুলিশ বলছে, সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় আশরাফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি একটি জমিতে বাড়ি নির্মাণ করছিলেন। সেই ব্যক্তির কাছে বিরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে ওই ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যানকে এক লাখ টাকা দিলে বাকি টাকার জন্য চাপ দেন সুজন। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি গত মঙ্গলবার রাতে সাভার মডেল থানায় সাইদুর রহমান সুজনকে আসামী করে চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করলে (মামলা নং-৫৬, তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০) পুলিশ রাতেই বিরুলিয়া এলাকা থেকে ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করে। এব্যাপারে অভিযোগকারী আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, গত রোজার ঈদের পর তিনি বিরুলিয়া ইউনিয়নের কাকাবো এলাকায় বাড়ি করতে গেলে সুজন চেয়ারম্যান ৬ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। পরে নিজের লোক বলে এক লক্ষ টাকা কমিয়ে দেন। পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তিনি গেলে সুজন চেয়ারম্যানের নিকট দাবীকৃত চাঁদার টাকা না নেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করেন। তখন সুজন চেয়ারম্যান তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদের একপাশে নিয়ে অতির্কিতভাবে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন তাকে মারধর করেন। সেখান থেকে প্রাণে বাঁচার জন্য তিনি তাৎক্ষনিক সুজন চেয়ারম্যানের হাতে একলক্ষ টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে ফিরে আসেন। বাদী গণমাধ্যমের দ্বারা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। এব্যাপারে বিরুলিয়া ইউপি সচিব মোঃ চাঁন মিয়া জানান, এই ইউনিয়নে প্রায় সাত বছর ধরে তিনি কর্মরত রয়েছেন, এই সময়ে তিনি সুজন চেয়ারম্যানের আমলে তাকে যতটুকু দেখেছেন চাঁদাবাজি কিংবা কোনো ধরণের দূর্নীতির সাথে তার সম্পৃক্ততা পান নাই। এব্যাপারে বিরুলিয়া ইউনিয়নের ৭,৮ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নুর তাজ বেগম জানান, আমি সুজন চেয়ারম্যান এর পরিষদের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য হিসেবে তাকে কখনো কোনো ধরণের চাঁদাবাজি কিংবা অন্য কোনোধরণের দূর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হতে দেখিনি। মুঠোফোনে বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অপূর্ব দত্ত জানান, এর আগে সরাসরি সুজন চেয়ারম্যানের নামে এরকম কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় নাই। তবে বিভিন্ন অভিযোগে সুজন চেয়ারম্যানের লোকজনের নাম উঠে এসেছে। এব্যাপারে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সালাউদ্দিন জানান, চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, আটক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনকে আজ (বুধবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।