মানিকগঞ্জে বন্যা ও নদী ভাঙনে সরকারি তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া জেলায় ৩০৬টি বিদ্যালয়ের ভবন, মাঠ ও সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে, বন্যা ও নদী ভাঙনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে দুই কোটি ৬০ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ৩৪ নং বাঁচামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৯৮ নং সুবুদ্ধি-পাচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৩ নং চরকাটারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙনের মুখে পড়েছে মুসলিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেন, জেলায় ৬৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩০৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৭০টি, ঘিওর উপজেলার ৬৮টি, সিংগাইর উপজেলার ৪০টি, সাটুরিয়া উপজেলার ৪৯টি, হরিরামপুর উপজেলার ১৫টি, শিবালয় উপজেলার ৩০টি বিদ্যালয় এবং দৌলতপুর উপজেলার ৩৪টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের কোনটির দেয়াল দেবে গেছে, খেলার মাঠের মাটি সরে গেছে আবার কোনটির সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া দৌলতপুর উপজেলায় তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোর সংস্কার কাজ করতে কমপক্ষে দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা খরচ হবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, মানিকগঞ্জের পদ্মা ও যমুনা তীরবর্তী তিনটি উপজেলা দৌলতপুর, হরিরামপুর এবং শিবালয় প্রতিবছরই ভাঙনের কবলে পড়ে। বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রতিবছরই ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে, আমি মনে করি নদী তীরবর্তী ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্থায়ী স্থাপনা না করে সেখানে স্থানান্তরযোগ্য স্টিলের কাঠামো দিয়ে স্কুল, মাদরাসা এবং আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করা দরকার। যাতে সেসব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া যায়। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে ।