নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ও ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমিয়ে বৃষ্টির পানিকে ধরে রাখতে আবাদিয়া খাল খনন করা হয়েছে। টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘আবাদিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি’র উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি’র) মাধ্যমে খাল খনন করা হয়। খাল খননের পর সুবিধা ভোগ করছেন হাজারো কৃষক ও সমিতির সদস্যরা। সমিতির সদস্যসহ স্থানীয়রা আর্থসামাজিক ভাবে উন্নয়ন হবে এমন প্রত্যাশা সচেতনদের। জানা গেছে, সরকারীভাবে নকশায় এটি খাল হিসেবে থাকলেও পূর্বে কখনো খনন না করায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় ওই বিলের পানি নামতে পারতো না। গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘আবাদিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির’ উদ্যোগে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট ৭টি এলসিএস (লেবার কন্ট্রাক সোসাইটি) মাধ্যমে স্থানীয় এলজিইডি হতে খনন করা হয়েছে। গুপিনগর থেকে কঞ্চিনগর পর্যন্ত ২ হাজার ৮৫০ মিটার খাল খনন এবং চারটি রেফারেল লাইন (সনাক্তকরন চিহ্ন) তৈরী করায় খরচ হয়েছে ২৬ লাখ ৩২ হাজার ৬৫২ টাকা।
উপজেলার আবাদিয়া, পত্নীতলা, কল্যানপুর, মহিমাপুর, গুপিনগর, চকআবদাল ও কঞ্চিপুকুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চকআবদাল খালের পাশ দিয়ে প্রায় ৬শ হেক্টরের মতো আবাদি জমি আছে। প্রতি বছর ইরি-বোরো মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে পাকা ধান ডুবে যেত। এতে ফসল নষ্ট হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হতেন কৃষক। জলাবদ্ধতা নিরসনে ও ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে খাল করা হয়। এতে উপকৃত হচ্ছে হাজারো কৃষক ও খাল পাড়ের বাসিন্দারা। একদিকে খালের পানিতে হাঁস পালন করে বেকার যুবকরা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছে, তেমনি মাছ শিকার করে আমিষের চাহিদা পূরন হচ্ছে। পত্নীতলা ইউপি চেয়ারম্যান ও আবাদিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি আলহাজ মো. মোস্তাফা শাহ্ চৌধুরী বলেন সমিতির পক্ষ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। খাল খননের পর থেকে জমির জলাবদ্ধতা নিরসন হয়েছে। খালের জমা পানি দিয়ে কৃষকরা রবিশস্যের আবাদ করতে পারবেন। পত্নীতলা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সৈকত দাস বলেন, ইতোপূর্বে কখনো খালটি খনন না করায় পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে ছিলো। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসলের ক্ষতি হতো। ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমিয়ে বৃষ্টির পানিকে ধরে রাখতে এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে খালটি খনন করা হয়েছে। এ পানি দিয়ে ফসল ফলানো সহ ‘মাছ চাষ ও হাঁস পালন’ করে সমিতির সদস্যরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।