বরিশাল প্রতিনিধি
অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরীর জনজীবন। সঙ্গে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে নগরীর নিম্নাঞ্চল। বৃষ্টির পানির সঙ্গে জোয়ারের পানি একাকার হয়ে জনদুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। একই অবস্থা বিরাজ করছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। প্লাবিত হয়েছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল।
এদিকে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে কীর্তনখোলার পানির প্রবাহ। ফলে নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক। আর এমন অবস্থা আরও দুই তিনদিন বজায় থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ৩-৪ দিনের টানা বৃষ্টি ও নদীতে জোয়ার আসার সঙ্গে সঙ্গে ডুবে যায় বরিশাল নগরীর অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাগরদীর দরগাহবাড়ি, ধান গবেষণা রোড, দক্ষিণ আলেকান্দার ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড, মুনসুর কোয়ার্টার, শ্রীনাথ চ্যাটার্জি লেন, বগুড়া রোড, নবগ্রাম রোড, কেডিসি বস্তি এলাকা, পোর্ট রোড ও পলাশপুরের নিম্নাঞ্চল, ভাটারখালসহ বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। শহরের বর্ধিতাংশ হিসেবে পরিচিত নগরীর কাশীপুর, টিয়াখালী, লাকুটিয়া, রুপাতলীরও বেশ কিছু অংশ নিমজ্জিত হয় জোয়ারের পানিতে। আকস্মিক এমন ঘটনায় ভোগান্তিতে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দা এবং পথচারীরা। তবে সন্ধ্যা নাগাদ ভাটা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে নেমে যায় পানির স্তর। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়া এবং উজানের ঢলে বরিশালের বেশ কয়েকটি নদীর পানির প্রবাহ বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।
পাউবোর গেজ রিডার আবু রহমান জানান, দেশের পশ্চিমাঞ্চলে চলমান বন্যার পানি দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী দিয়ে সাগরে নামছে। বর্তমানে কীর্তনখোলার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে ২.৬৬ মিটারে বইছে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই প্রবাহ থাকে ২.৫৫ মিটারে। সর্বশেষ চলতি বছরের সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে বেড়েছিল কীর্তনখোলার পানি। সেই মাসে সর্বোচ্চ ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানির প্রবাহ বেড়েছিল কীর্তনখোলায়। আর সেসময় নিমজ্জিত হয়ে পড়ে বরিশালের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ক্ষতি হয়েছিল মৌসুমী ফসলেরও। যদিও তেমন সম্ভাবনা এখনও নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন পাউবোর কর্মকর্তা। বরিশাল আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক হুমায়ুন কবির জানান, মৌসুমী বায়ু প্রবাহের কারণে এখন যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেটা স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। যদিও নদীবন্দরে ৩নং সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এমন আবহাওয়া আরও ২ থেকে ৩ দিন বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।