চুয়াডাঙ্গা জেলায় কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। দিনের বেলায় গরম ও রাতের বেলায় শীত পড়তে শুরু করেছে। এ জেলায় বর্তমানে দিন ও রাতের তাপমাত্রার গড় ব্যবধান ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে অস্বাভাবিক হারে শিশু ও নবজাতকদের মধ্যে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ৫ শতাধিক শিশু রোগী। গত শনিবার রাতেও ১২৯ জন শিশু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় ভর্তি ছিলো ৭৮ জন শিশু। হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে ২২ শয্যার বিপরীতে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে । এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন অন্তত পাঁচশতাধিক রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে অভিভাবকদের। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শয্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকায় শয্যা তো মিলছেই না, বারান্দায় আশ্রয় নিয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়েও জায়গার অভাব হচ্ছে। ভর্তি হওয়া এসব রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। এতে সুস্থ হতে দেরি হচ্ছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা আরও জটিল হচ্ছে। বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আসা আখি আক্তার নামে এক অভিভাবক উদ্বেগ এবং হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমার বাচ্চার জ্বর এক সপ্তাহ ধরে কমছে না। হাসপাতালে ভর্তি করতে এসে দেখি কোনো শয্যা খালি নেই। বাধ্য হয়ে বারান্দায় জায়গা নিতে হয়েছে। চিকিৎসা পাচ্ছি, কিন্তু জায়গার সংকটের কারণে সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে পারছি না। শিউলি খাতুন নামে আর এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি কিন্তু এত রোগী যে ডাক্তারদের সঠিকভাবে দেখার সময়ই নেই। কখনো কখনো দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসা সেবা পেতে। এছাড়াও, অনেক অভিভাবক হাসপাতালের অবকাঠামোগত সংকট নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, শয্যার সংখ্যা বাড়ানো উচিত এবং জরুরি ভিত্তিতে আরও চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, বর্তমানে আমাদের হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রচুর রোগীর চাপ পড়েছে। শিশু ওয়ার্ডে ২২ শয্যার অনুমোদন রয়েছে। তবে আমরা শিশুদের জন্য ৫০ টি সিট করেছি। বর্তমানে এতেও আমাদের জায়গা সংকট হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক শিশু ভর্তি থাকছে। তাপমাত্রার অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মধ্যে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ছে। আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন, তবে শয্যা সংকট এবং পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল অতিসত্বর ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হোক।