টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিদ্যুতে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং ও তীব্র তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিন ও রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় নাভিশ্বাস অবস্থা। শুক্রবার রাতে হিটস্ট্রোকে সালমা নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের দাবী, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়ায় ঘনঘন লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে।
এদিকে তীব্র তাপদাহের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। শুক্রবার রাতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক সার্জেন্টের স্ত্রী মারা গেছেন।
ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুর সাবস্টেশনের অধীনে বিদ্যুতের প্রয়োজন ২৪ মেগাওয়াট। সেখানে ১৩-১৫ ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ১৩২ কেবি ভোল্ট বিদ্যুতের মধ্যে ১০৬ কেবি পাওয়ার ভোল্ট পাওয়ায় বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ থাকে। এতে শহরে এক ঘন্টা পর পর লোডশেডিং ও গ্রাম পর্যায়ে আরো বেশি সময় লোডশেডিং দেয়া হয়।
জানা গেছে, বিদ্যুতের অভাবে ধান খেতে পানি দিতে না পারায় জমি ফেটে যাচ্ছে। তীব্র রোদে ধান অপরিপক্ক হয়ে পেকে যাচ্ছে। এতে ধানে চিটা ধরার আশংঙ্কা করছে কৃষকরা। এছাড়া পোল্ট্রি খামারের মুরগিগুলো মারা যাচ্ছে তীব্র গরমে। এতে নিঃস্ব হচ্ছে খামারীরা। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে চিকিৎসা সেবা দিকে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। এছাড়া বৃষ্টি না হওয়ায় গাছের গুটি আম ঝড়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে পৌরসভার ফকিরপাড়ার চরপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সানাউল্ল্যার স্ত্রী সালমা বেগম (৫০) হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এরআগে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে আনা হয়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলায় গড়ে দিনরাত ৭-৮ ঘন্টা বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে।
ভূঞাপুর পূর্বপাড়ার উজ্জল জানান, শুক্রবার খুবই লোডশেডিং দেয়া হয়েছে। রাত ১২টার পর বিদ্যুৎ যাওয়ার পর রাত ৪টায় এসেছে। দুই ঘন্টা থাকার পর ভোর ৬টায় আবার চলে গেছে। সারাদিনে তেমন বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না।
ভারই গ্রামের পোল্ট্রি খামারী শামীম বলেন, খবরে দেখলাম দেশে সবোর্চ্চ বিদ্যুত উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। কিন্তু সেই বিদ্যুত কই। তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে গরমে স্টোক করে খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। সারাদিনে ৩-৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও সেটি মিসড কলের মত। এছাড়া বিদ্যুতের ভোল্টেজ নেই।
ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়ায় লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি। যেটুকু বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে সেইটুকুই ভাগ-বন্টন করে সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সোবহান জানান, রাতে এক নারীকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। প্রচন্ড গরমের কারণে স্টোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে