আসন্ন দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে দিনাজপুরের বিরল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিকী সাগর। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক কিংবা দলীয় ভাবে কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন করা যাবে না । যে কেউ এবারের নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে পারবেন। মঙ্গলবার বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করার লক্ষ্যে বর্ধিত সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামীলীগ। বর্ধিত সভার শুরুতেই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বর্ধিত সভার মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা উপেক্ষা করে দল কতৃক প্রার্থী ঘোষনা উচিৎ নয় এমন মন্তব্য করলে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি তাকে উচ্চস্বরে দলের সিদ্ধান্ত না মানলে সভা থেকে বের হয়ে যেতে বললে হট্টগোল শুরু হয়। সভাপতির এমন বক্তব্য শুনে দলীয় কার্যালয়ের উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিব্রত বোধ করেন। সভায় উপজেলার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলার অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের সভায় বার বার বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে স্থানীয় সাংসদ বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ ও তার মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত করতে চান তারা। তবে উপস্থিত অনেক নেতা কর্মীদের বলাবলি করতে শোনা যায় তাহলে মন্ত্রী মহোদয় কেন সরাসরি বা কনফারেন্সে এসে কিছু বলছেন না। এক পর্যায়ে সভায় উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে আগত নেতা কর্মীদের কাছে মতামত চাওয়া হয় যে উপজেলা আওয়ামীলীগ যা সিদ্ধান্ত নিবেন তা তারা মেনে নিবেন কি না? নেতা কর্মীরা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের একত্রিত করে সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার পক্ষে মতামত দেন। কেউ কেউ শুধু চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বিষয়টি প্রাধান্য না দিয়ে , ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ তিনটি পদেই গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে মত দেন। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আজাদ মনি ও কৃষক লীগের সভাপতি মজিবর রহমান সহ অনেকেই আবার আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা না করে যে যার পক্ষে কাজ করার পক্ষে মতামত দেন। মতামতের শেষ পর্যায়ে তিন জন প্রার্থী তাদের মতামত পেশ করেন। প্রার্থী ফারুক আজম কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে সন্মান করে গ্রহন যোগ্য ও অংশ গ্রহন মূলক নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে পক্ষে মতামত দিয়ে স্থানীয় সাংসদের নাম ব্যবহার না করার অনুরোধ জানান। চেয়ারম্যান প্রার্থী এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালন ও প্রার্থীদের কর্মীদের হুমকি ধামকি ও সাম্প্রদায়িকতার ইস্যু তৈরী না করার অনুরোধ জানান। এরপর দুপর ২ টায় খাবারের বিরতির সময় নেতাকর্মীরা খাবার খেতে গেলে অল্প কয়েক জন নেতা কর্মীকে সাথে নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ সবুজার সিদ্দিক সাগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রমা কান্ত রায়কে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী বলে ঘোষনা দেন। এমন ঘোষনার পর মনোনীত প্রার্থী ও সাধারন সম্পাদক রমাকান্ত রায় নেতাকর্মীদের আশির্বাদ কামনা করে বলেন আমি পরাজিত হলে সাধারন সম্পাদক হারবে আর সাধারন সম্পাদক হারলে আওয়ামীলীগ হারবে। বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ সবুজার সিদ্দিক সাগর। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আফতাফুজ্জামান মিতা বলেন , সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বাথের্ কোন সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী বা জেলা পর্যায়ের কোন দায়িত্বশীল নেতা, উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবে না । আর দলীয় ভাবে যেহেতু প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না । সেহেতু দলীয় ভাবে কোন প্রার্থীর নাম ঘোষনা করার কোন সুযোগ নেই । আমার জেলার কয়েকটি উপজেলায় এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে । সাথে সাথেই আমার দায়িত্ব হল কেন্ত্রীয় আওয়ামী লীগকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে । ইতো মধ্যেই বিরল উপজেলার বিষয়ে কেন্দ্রে জানানো হয়েছে । এ বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সবুজার সিদ্দিকী সাগর এর মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।