রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। কার্যালয়কে ক্রাইম সিনের আওতায় এনেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুপাশেই বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা আছে৷ পাশে রাখা হয়েছে জলকামান ও প্রিজন ভ্যান। আর কার্যালয়কে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে ক্রাইম সিনের ফিতা দিয়ে। এদিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে ঘোরাফেরা করা দুজনকে বিএনপির কর্মী সন্দেহে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনা ঘটে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পল্টন জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) গোলাম রোহানী। গোলাম রোহানী মানবকণ্ঠকে বলেন, ‘গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ক্রাইম জোন ঘোষণা করেছে। আর দুজনকে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে অপরাধী না হলে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
সরেজমিন দেখা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি টিম বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। তারা ফিতা দিয়ে দেওয়া ব্যারিকেডের ভেতর প্রবেশ করেন এবং তাদের কার্যক্রম চালাতে থাকেন। সকাল ১০টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে অনেক পুলিশ সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে এসব সদস্যকে দেখা যায়।
অন্যদিকে আজ বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতাল পালিত হচ্ছে। যদিও রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ হয়ে নয়াপল্টন পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে কেবল বাস ছাড়া ব্যক্তিগত সব যানবাহনই চলছে। আর এ পুরো এলাকায় দুটি বিআরটিসির বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়েও সব ধরনের ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এর আগে সকালে বিএনপি মহাসচিবের গুলশানের বাসায় যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা। পরে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান শায়রুল।
অপরদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসা সকাল থেকে ঘেরাও করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা গেইট ভাঙ্গার চেষ্টা করছে করছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। শনিবার সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ের নিচে হ্যান্ড মাইকে প্রথমে হরতালের ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে জামায়াতের পক্ষ থেকেও আলাদাভাবে হরতাল পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে দিনের শুরুতে এখন পর্যন্ত দুই জায়গায় বাসে আগুন দেয়া ছাড়া হরতালের তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। কিছুটা কম হলেও অন্যান্য দিনের মতোই রাজধানীতে চলছে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ঘুরে দল দুটির কোনো নেতাকর্মীকে সড়কে দেখা যায়নি। তবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকার সড়কে অন্যান্য দিনের মতোই সাধারণ মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে বের হয়েছে। এমনকি সড়কগুলোতে আস্তে আস্তে সব ধরনের যানবাহন নামতে শুরু করেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কর্ম-চাঞ্চল্যের পাশাপাশি বাড়তে শুরু করেছে ব্যক্তিগত ও গণপরিবহন।