রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে জালিয়াতি করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী ও সহায়তাকারী রাবি ছাত্রলীগের নেতাসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম ও আটক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মা রেহেনা বেগম জড়িতদের নাম উল্লেখ করে নগরের মতিহার থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময় (২৪), বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রাজু আহমদ(২৩), লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মহিবুল মমিন সনেট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকোয়ান সিদ্দিক প্রাঙ্গণ (২২), মো. সাকিবসহ (২৪) ও জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী মো. আহসান হাবিবসহ (১৯) অজ্ঞাত আরও ২-৩ জন। মামলায় বলা, প্রক্সি চক্রের একটি গ্রুপের সঙ্গে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা চুক্তি করে আহসান হাবীব। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা নগদ ও ৬০ হাজার টাকার চেক পরিশোধ করেন তিনি। ভর্তির পর বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভর্তি শেষে বাকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আটক রেখে শিক্ষার্থীর বাবার কাছে আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করে ওই প্রক্সি চক্র। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। জানা যায়, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে অনার্স ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে ভর্তি হতে আসে মো. আহসান হাবিব নামের এক শিক্ষার্থী। সে পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিষয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য তার মায়ের সঙ্গে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞান ভবনে আসে। ভর্তি হওয়ার পর ওই ভবনের বাহিরে আসলে ওইদিন দুপুর পৌনে তিনটায় অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন ব্যক্তি তাকে কৌশলে অপহরণ করে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা আবাসিক হলের তৃতীয় তলায় নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর বাবার কাছে ফোন করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এদিকে ছেলের কোনো সংবাদ না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরিয়াল বডির লোকজনের সহায়তায় ওইদিন বিকাল সাড়ে ৫টায় শের-ই-বাংলা হল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তারপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসা হয়। মতিহার থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বীকার করে যে, সে নিজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে পলাতক আসামিদের সহায়তায় অপরের দ্বারা প্রক্সি পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। তবে ওই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার প্রক্সি পরীক্ষা কোন পরীক্ষার্থী দিয়েছে অথবা তা বলতে পারেনি। মতিহার থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একজনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে রাবি প্রশাসন ও আটককৃত আসামির মা পৃথক দুটি মামলা করেছেন।