জ্যৈষ্ঠের খরতাপে পুড়ছে যশোরের জনপদ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এছাড়া লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বস্থি পাচ্ছেন না কোনো স্থানে। এতে হিট স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। এই ধারা পুরো জ্যৈষ্ঠ মাস ঝুড়ে অব্যাহত থাকবে এমন বার্তা দিয়েছে আবহাওয়াবিদরা। এই অতিরিক্ত তাপমাত্রা যেনো সহ্য করার মতো না। তীব্র গরমে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবি মানুষ। জ্যৈষ্ঠে খরতাপে অতিষ্ঠ জনজীবন। যেন কোথাও স্বস্তি নেই। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন- তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। আরো অন্তত ২ সপ্তাহ এই ধারা অব্যাহত থাকবে। বাড়তে পারে গরমের তীব্রতা। দুই সপ্তাহ পরেই দেখা মিলতে পারে বৃষ্টির। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রাকৃতিক বাতাসটা আসছে না সেভাবে। আর জলীয় বাষ্পও খুব কম। যার ফলে শরীরে গরম বেশী অনুভুত হচ্ছে। যশোরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন যেনো বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘাম ঝরিয়ে ছুটতে হচ্ছে তাদের।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের হানুয়ার গ্রামের মাঠে পাটের ক্ষেতে শ্রমিকের কাজ করছেন আব্দুর রহিম নামের একজন শ্রমিক। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, গরম কেমন পড়ছে, তা তো বুঝতেই পারছেন। এটা তো ধনী-গরিবের জন্য আলাদা হয় না। তারপরেও যাদের বাড়িতে বা অফিসে এসি আছে, তারা এসির মধ্যে শান্তিতে থাকতে পারে, বাড়ি ও অফিসে ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে বসে থাকতে পারে। আর আমাদের মতো গরিবের এই গরমের মধ্যেই কষ্ট করে ভাত জোগাতে হয়। গরমে শুধু যে কষ্ট হচ্ছে তা নয়, আয়-রোজগারও কমেছে। এখন আর প্রতিদিন কাজ হয় না। হলেও করতে পারি না। বৃহস্পতিবার (০১ জুন) দুপুরে যশোরের পর্যটন নগরী রাজগঞ্জ বাজারের জয় বাংলা চত্বরের ফুটপাতে রোদের মধ্যে বসে মসলা বিক্রি করছে হকার নুুরুল ইসলাম। তিনি এপ্রতিনিধিকে বলেন, কষ্টের তো শেষ নেই। কিন্তু পেট চালাতে হলে রোদ হোক বা বৃষ্টি, গরম হোক বা শীত, আমাদের বসতেই হবে। এই প্রচন্ড রোদে এক ঘন্টাকে মনে হচ্ছে ২৪ ঘন্টা। কিন্তু উপায় নেই। জায়গা ছেড়ে দিলে আর পাবো না। এই ভাবে আয় রোজগার করে সংসার চালাতে হয়।
রাজগঞ্জ এলাকার বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম বলেন- বাইরে তো গরমের জন্য এক ঘণ্টাও থাকা যায় না। বাসায়ও গরমে নাজেহাল অবস্থা। মাথার উপর ফ্যান ঘোরে, কিন্তু সেই বাতাসও গরম। ফ্যান দুইটা লাগালেও ঘামতে হয়। কোথাও একটু ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যায় না। পুকুর বা বাঁওড়ের পানি, সব গরম। যেনো ফুটন্ত। এই অসহনীয় গরমে কোথাও স্বস্তি নেই।