বাজারদর ওঠানামার সঙ্গে ক্রেতাদের স্বস্তির ব্যারোমিটার ও উঠানামা করে। কখন কোন দ্রব্যের দাম বাড়বে অথবা কমবে তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কায় থাকে তারা। এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের কোনো শেষ নেই। এ বছর সবজির ভরা মৌসুমেও বাজার ছিল চড়া। অথচ গত বছরের তুলনায় বেশি ফলনের পরও সবজির দর নিয়ে সাধারণ মানুষ ছিল ভোগান্তিতে। চাষিরা তাদের উৎপাদিত ফসল অবিশ্বাস্য কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হলেও আশ্চর্যজনকভাবে শহরের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা সেই সবজি বিক্রি করে অত্যধিক মূল্যে। স্বস্তির খবর হচ্ছে, সরকারের বাজার মনিটরিং ও তদারকি জোরদারের ফলে কামারখালী বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে সবজির দাম কমে যাওয়ায় জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে। বলা সংগত, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে বাজারে দামের হেরফের করতে না পারে সেজন্য সরকার তার মনিটরিং ও তদারকি জোরদার করেছে। এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। পাশাপাশি বাজারে নতুন ওঠা গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম বেশি হলেও অন্যান্য শাকসবজির দাম সহনীয় মাত্রায় রয়েছে। আমরা আশা করি, আগামী দিনগুলোতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কোনো সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি না হয়। অন্যদিকে পাইকারি বাজারে খুচরা বাজারের তুলনায় দাম অনেক কম হলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের অতি মুনাফার লোভে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। মনে রাখতে হবে, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নয়, বছরের পুরো সময়ই বাজারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং দরকার। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভোক্তাদের জিম্মি করে বাজারে কৃৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। বিষয়টি প্রশাসনের উচিত আরো খতিয়ে দেখা। পাইকারি বাজার, গুদাম, খুচরা বাজারসহ সর্বস্তরে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যারা রয়েছেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অস্বীকার করার উপায় নেই- আমাদের দেশে বাজার ব্যবস্থা এমনিতেই সদা চঞ্চল, স্থিতিশীল রাখতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়। এ নিয়ে নাগরিকদের থাকে বাড়তি অথচ প্রায় সাংসারিকদের বাৎসরিক উদ্বেগ। আজ পেঁয়াজ তো কাল লবণ, পরশু চাল তো তরশু চিনির দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দর ওঠা নামা করতেই পারে তার জন্য আমরা চাই বাজার ব্যবস্থা সচল রাখতে এবং নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রমজানের আগেই সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হোক।