গোপালগঞ্জ সদরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর মায়ের নামাঙ্কিত শেখ সায়েরা খাতুন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সুষ্ঠু স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা গোপালগঞ্জ পৌরসভার পৌরপিতা মেয়র শেখ রকিব হোসেন।
বছরের পর বছর দুর্নীতির কারণে নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিলো হাসপাতালটি। অনিয়ম, দুর্নীতি, কর্তব্যে অবহেলা, অপরিচ্ছন্ন আর অব্যবস্থাপনায় হরহামেশাই চলতো এখানে। এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সমস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির রোধ করে স্বাস্থ্য সেবাসহ হাসপাতালের সামগ্রিক বিষয় দেখভাল করছেন মেয়র শেখ রকিব হোসেন।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন একটা মাফিয়া চক্রের ছত্রছায়ায় হাসপাতালে রোগীরা ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। ভর্তি রোগীদের দেওয়া হয় নিম্নমানের খাবার ও নামমাত্র ঔষধ। জরুরি বিভাগে চিকিৎসায় রয়েছে গাফলতি।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরিবর্তে আউটসোর্সিং কর্মীরা কাটা-ছেঁড়াসহ সেলাই, ব্যান্ডেজের কাজ করছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, ‘অদৃশ্য দুর্নীতিবাজ শক্তি প্রতি অর্থ বছরে নামমাত্র ভাউচারে ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রিক ক্রয় বাবদ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কয়েক কোটি টাকার সিটিস্ক্যান ও এম আর আই মেশিন অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।’
সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী সোহেল রানা বলেন, ‘দুর্নীতি আর নোংরা আঁতুড়ঘর সদর হাসপাতাল। ইন্টার্নি শিক্ষার্থীরা ভুল চিকিৎসা সেবা দেয় আর ডাক্তারগুলো বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী দেখতে ব্যস্ত। প্যাথলজি, এক্স -রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান বিভাগে বেশি দূর্নীতি হয়। এতে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীর ভোগান্তির শেষ নেই।’
এসব অনিয়মের বিষয়ে শেখ সায়েরা খাতুন জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক অসিত কুমার মল্লিক বলেন, ‘স্যালাইন পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলেও ওষুধের কোনো ঘাটতি নেই। তবে কিছু ডাক্তার ও নার্সরা ব্যক্তি স্বার্থের জন্য কারসাজি করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে।’
এবিষয়ে গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শেখ রকিব হোসেন বলেন, ‘ চিকিৎসায় অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। আর তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তিনি সকলকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন, সুষ্ঠু পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আহবান জানিয়েছেন।’