কিশোরগঞ্জে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মির্জা কাউসার (২৮) অপহৃত হননি। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে গেছে। তিনি ঢাকায় ডিবি অফিসে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে। সোমবার বিষয়টি সাংবাদিকদেরকে নিশ্চিত করেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আ. ন. ম নৌশাদ খান। তিনি জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ রোববার রাত ১০টার দিকে ফোনে তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ডা. কাউসারের বাবার সঙ্গেও ডিবির পক্ষ থেকে ফোনে কথা বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্টি এলাকার মেডিক্স কোচিং সেন্টার থেকে ডা. মির্জা কাউসারকে গাড়ীতে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত লোকজন। তিনি প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রভাষক। ডা. কাউসার জেলার বাজিতপুর উপজেলার উজানচর গ্রামের মির্জা আবদুল হাকিমের ছেলে। প্রসঙ্গত গত শনিবার, ১২ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের খরমপট্টি এলাকার জেলা সমবায় ভবনের দোতলায় মেডিক্স কোচিং সেন্টার থেকে তাকে কালো রঙের একটি হাইয়েস গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। মেডিক্স কোচিং সেন্টারে ডা. কাউসারের সহকর্মী ডা. সুমন মিয়া জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি ও ডা. কাউসার কোচিং সেন্টারের অফিস কক্ষে একই সাথে বসা ছিলেন। এসময় কালো রঙের হাইয়েস গাড়ি থেকে ৫জন লোক নেমে অফিস কক্ষে ঢুকে জানতে চান ডা. কাউসার কে? এসময় ডা. কাউসার নিজের পরিচয় দিলে তারা তাকে ডেকে অফিসের বারান্দায় নিয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ কথা বলে তারা ডা. কাউসারকে নিয়ে নিচে নামেন। এসময় ডা. সুমনও তাদের সাথে নামেন। এসময় কালো গাড়ির একজন গাড়ির ভিতরে থাকা অন্য একজনকে জিজ্ঞেস করেন এটাই ডা. কাউসার কিনা? গাড়ির ভিতর থেকে একজন বলেন, ইনিই। ব্যবহৃত কালো গাড়িটির দরোজা খুলে একজন ডা. কাউসারকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে উঠতে বলেন। এসময় ডা. কাউসার ডা. সুমনকে বলেন, সুমন ডা. নওশাদ স্যারকে ফোন দাও। এসময় ডা. সুমন ফোন বের করতেই একজন ফোনটি কেড়ে নিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এসময় ডা. সুমন কালো গাড়িতে পুলিশের পোষাক পড়া একজনকে সামনে সিটে বসে থাকতে দেখেন। পরে অপহরণে নেতৃত্ব দেয়া একজন দাড়ি টুপি ওয়ালা ব্যক্তি গাড়ির দরোজা বন্ধ করে দিয়ে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দিয়ে সাথে আসা একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তিনিও চলে যান।এরপর কালো গাড়িটি খরমপট্টি বকুল তলার মোড় দিয়ে এগিয়ে আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে দিয়ে সোজা গাইটাল বাসস্ট্যান্ড হয়ে ময়মনসিংহ-ভৈরব রোড ধরে বিন্নাটি গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে সোজা পাকুন্দিয়ার দিকে চলে যায়। এর আগে মেডিক্স কোচিং সেন্টারের একটি মোটরসাইকেলে করে দুইজন কালো গাড়িটিকে অনুসরণ করতে শুরু করে। তারা জানান, নতুন জেলখানা মোড়ে গাড়িটি থামলে গাড়ি থেকে একজন নেমে গিয়ে অপেক্ষমান একটি মোটরসাইকেলে করে শহরের দিকে ফিরে আসেন। অনুসরণ করা মোটরসাইকেলটি পাকুন্দিয়া পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসে। তারা কালো গাড়িটিকে দ্রুত ঢাকার দিকে চলে যেতে দেখেন।