চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে সিম চাষ হয়েছে। ফলন ভালো ও ভালো দাম পেয়ে চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার চাষীরা আগাম উন্নত জাতের সিম চাষ মাচা পদ্ধতিতে করে থাকে। এ মাচা পদ্ধতিতে সিম চাষ করে চাষীরা যেমন ভালো ফলন পাচ্ছে তেমনি ভালো দাম পাচ্ছে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। জেলার সদর উপজেলার দোস্ত-দিকেষ্টপুর গ্রামের মাঠে প্রতি বছরই ৫-৬শ বিঘা জমিতে অটো জাতের সিমের আবাদ হয়ে থাকে। গত দু’তিন বছর যাবত অটো জাতের সিমের আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছে চাষীরা। বিঘাপ্রতি খরচ বাদ দিয়ে লাখ টাকার উপরে লাভ করছে । এই দুটি গ্রামের প্রায় সব চাষীরা ২ থেকে ৩ বিঘা পর্যন্ত সিমের আবাদ করে থাকে। এসব সিমের আবাদের জন্য তারা ভাদ্র মাস থেকে জমি প্রস্তুত কাজ শুরু করে। এরপর তার, বাশের কাবারি দিয়ে তৈরি করা হয় সারিবদ্ধ মাচা। সেচ দিয়ে লাগানো হয় বীজ। লাগানোর ৪৫-৫০দিন পরেই ফল আশা শুরু হয়। ১ম ধাপে সিম কম উঠলেও পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ১০০ মন পর্যন্ত সিম তোলা যায়। সিম বিক্রি করার বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে নগদ অর্থে সিম ক্রয় করে থাকে। এবছর বর্তমান বাজার দর ৫০টাকা কেজি বিক্রি করছে চাষীরা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্ত গ্রামের তরুণ চাষী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২বিঘা জমিতে তাদের অটো জাতের সিম চাষ করেছে। এ পর্যন্ত ১লাখ ৮০হাজার টাকার সিম বিক্রি করা হয়েছে। আরও ৫০হাজার টাকার সিম বিক্রি হবে বলে আশা করছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দিকেষ্টপুর গ্রামের চাষী মিজানুর রহমান বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে একই জাতের সিম আবাদ করেছি। সংসারের যাবতীয় খরচ সিম বিক্রির টাকায় করতে হয়। একটা ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছি, একটা ছেলেকে কোরআনের হাফেজ করেছি। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানাগেছে, চলতি মরসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় ৩০৬ হে.জমিতে সিমের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৪৯ হেক্টর আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২৩ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ১৫৫ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ৭৯হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চলতি মরসুমে জেলায় ঈশা-১, বারি-৩’৪ ও বাও-৪ আগাম জাতের সিমের চাষ হয়েছে। আমরা কৃষকদের কে সিমের ভালো ফলন পেতে সর্বক্ষণিক সহযোগিতা করে আসছি। তাদের কে সিমের জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ছায় ব্যবহার ও হাতবাছায় করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।