দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজ। এই সেতু নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নতুন প্রযুক্তি। ইতিমধ্যে দুটি স্প্যানের মধ্যে সুপার স্ট্রাকচার তোলার মধ্য দিয়ে যমুনার বুকে দৃশ্যমান হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন প্রযুক্তির লোহা আর কংক্রিটের সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে মেগা এই প্রকল্প। অত্যাধুনিক স্প্যান বসছে সেতুটিতে। ৫০টি পিলারের মধ্যে ১০টির কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে কাঠামোতে আলাদাভাবে রং করার প্রয়োজন হবে না। এই প্রক্রিয়া বেশ টেকসই। বলা হচ্ছে, এর ফলে আগামী ১০০ বছরেও সেতুর কাঠামোয় মরিচা ধরবে না। এমনকি আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে গার্ডারের রংও বদলে যাবে নিজে থেকেই।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম জানান, আগে আমরা মাত্র ৩৮টি ট্রেন চালাতে পারতাম। এখন এই রেলসেতু চালু হওয়ার পর ৮৮টি ট্রেন চালাতে পারব। আগে একটি রেল থামলে আরেকটি চলত। কিন্তু এটি ডাবল লাইনের হওয়ায় একই সঙ্গে একাধিক ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
তিনি আরো জানান, সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে ১০টির কাজ শেষ হয়েছে ইতিমধ্যে। সেতুর ৪৭ ও ৪৮ নম্বর পিলারের ওপর এরই মধ্যে বসানো হয়েছে প্রথম স্প্যান আর ৪৫ ও ৪৬ নম্বর পিলারে বসানো হয়েছে দ্বিতীয় স্প্যান। দ্রুত সময়ের মধ্যে আরো কয়েকটি স্প্যান বসানো হবে। দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে দ্রুত এগিয়ে চলেছে এই প্রকল্পের কাজ।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান জানান, গত ১৬ অক্টোবর টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর প্রান্তে দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বের প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। ইতিমধ্যে সেতুর ৪৬ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি আমরা প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে পারব।
এই সেতুর মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে উল্লেখ করে স্থানীয় এমপি ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না বলেন, এতে আমাদের উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা একটা বড় সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জে ইকোনমিক জোন, শিল্পপার্কসহ নানা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৯ নভম্বের বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জাইকা।