জাতীয় দলের অনূর্ধ্ব-১৯ এ চান্স পেয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃতি সন্তান সোহাগ আলী। ৩১ অক্টোবর ২০ দিনের পাকিস্তান সফরে টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচে খেলতে যাবেন সোহাগ আলী সহ অনূর্ধ্ব-১৯ এর স্কোয়াড। জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ায় আনন্দের বন্যা বইছে সোহাগের পরিবার, স্বজন, ক্রীড়াঙ্গন সহ পুরো ঠাকুরগাঁও জেলার ক্রিকেট প্রেমী মানুষের মাঝে। সকলের চাওয়া ভাল পারফরমেন্সের মাধ্যমে দেশের নাম বিশ্বে উজ্জ্বল করবে। জাতীয় দলের অনূর্ধ্ব-১৯ এ চান্স পাওয়া সোহাগ আলী ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ধারিয়া বেলসাড়া গ্রামের ওবাইদুর রহমানের ছেলে। তাঁর বাবা একজন সাবেক ইউপি সদস্য। ক্রিকেটার সোহাগ আলী কুশলডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এসসি পাশ করেন। বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী বিএম টেকনিক্যাল কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। জানা যায়, অনূর্ধ্ব -১৯ এ ১০টি ম্যাচে ভাল পারফরমেন্স করায় সোহাগ আলীকে নির্বাচন করা হয় পাকিস্তান সফরের জন্য। তিনি মিডর্নার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলবেন। তিনি ১৪ নং জার্সি পড়ে খেলছেন। এর আগে অনূর্ধ্ব -১৭ এ ঘরোয়া ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন তিনি। ৩১ অক্টোবর পাকিস্তান সফরে জন্য যাবেন এবং ২০ নভেম্বর দেশে ফিরবেন। পাকিস্তান সফরে একটি টেস্ট ম্যাচ ও পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবেন। তার বন্ধু মহল ও স্থানীয়রা বলেন, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে প্রথম কেউ জাতীয় দলে চান্স পেয়েছে এটা গর্বের বিষয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ভাল কিছু করুক এটাই আশা করি। সে ছোট বেলা থেকেই অন্য খেলার চেয়ে ক্রিকেটে ভাল খেলত। সকলের উৎসাহের ফলে সিদ্ধান্ত নেন জাতীয় দলে একদিন খেলবেই। আজ তাঁর আশা পূরণ হয়েছে। আগামীতে হয়ত জাতীয় দলের হয়ে খেলবে। জাতীয় দলে চান্স পাওয়া সোহাগ আলীর বাবা ওবাইদুর রহমান জানান, আমার ছেলে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে খবর শুনে আমি যে কতটা খুশি তা ভাষায় বুঝাতে পারব না। সকলের দোয়ায় আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমার ছেলের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। সে যেন দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারে। ছোটবেলা থেকেই সোহাগ ক্রিকেট খেলার প্রতি অনেক আগ্রহী ছিল। আমরাও তাকে উৎসাহ দিয়েছি। কখনই তাকে খেলতে বাধা দেইনি। অনূর্ধ্ব-১৯ চান্স পাওয়া সোহাগ আলী জানান, গত ৭ বছর ধরে সহপাঠী, মা-বাবার উৎসাহ ও নিজের ইচ্ছা পূরণের জন্য ক্রিকেট খেলা শুরু করি। আমার বাবা আমাকে এ নিয়ে অনেক সার্পোট করছে যা কখনও ভুলব না। বাবা না হয়লে হয়ত কোনোদিন এ জায়গায় আসতাম না সেই সাথে আমার শিক্ষক বালিয়াডাঙ্গী বিএম টেকনিক্যাল কলেজের পিন্সিপাল সাদেকুল ইসলাম আমাকে সর্বদাই পরামর্শ ও পথ দেখিয়েছেন। পরবর্তীতে ঠাকুরগাঁও জেলা কোচ রোকনুজ্জামান রাহাত স্যার আমাকে সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে অনূর্ধ্ব-১৯ এ চান্স পেয়েছি। আশা করি সকলের দোয়ায় ভাল খেলা উপহার দিতে পারব। এবং পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়ে দেশের সুনাম অর্জনে ভূমিকা রাখব। বালিয়াডাঙ্গী বিএম টেকনিক্যাল কলেজের পিন্সিপাল সাদেকুল ইসলাম জানান, সোহাগের ক্রিকেটের প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল। তাই তাঁর বাবা আমার কাছে আসেন পরামর্শ চাইতে। আমি যেহেতু জেলা ক্রীড়া পরিষদের সদস্য তাই আমি তাঁর দায়িত্ব নিয়ে জেলা কোচ রোকনুজ্জামান রাহাতের হাতে তুলে দিও। এর মধ্যে আমি সবসময়ই সোহাগের পাশে ছিলাম। মধ্যখানে একটু হাল ছেড়ে দিয়েছিল পরবর্তীতে তাঁকে বুজিয়ে আবার ফিরিয়ে আনি। সে আজ অনেক ভাল জায়গায় যেতে পারছে। এটা একটা আনন্দের বিষয়। আশা করি সে ভাল কিছু করবে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে জাতীয় দলের অনূর্ধ্ব-১৯ এ সোহাগ চান্স পেয়েছে এটা আনন্দের বিষয়। আশা করি সে ভাল পারফরমেন্সের মাধ্যমে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। তার সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।
নবচেতনা/আতিক