পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দয়া করে শ্রমিকের দুর্বলতাগুলোকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না। বরং, উদার সমর্থন ও অর্থায়নের মাধ্যমে সেই দুর্বলতাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্যের চেষ্টা করুন।

বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শ্রম অধিকার, শালীন কাজ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত ‘কাজের মৌলিক নীতি ও অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

আইএলও-এর সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে বাংলাদেশের। দিবসটি উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইএলও যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতি বাংলাদেশকে দুর্ভাগ্যজনক অতীতে টেনে না নিয়ে এর দূরদর্শী প্রচেষ্টায় যোগদানের আহ্বান জানান। অন্যথায় শুধুমাত্র কিছু ‘স্থায়ী’ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করাই হবে বলে মন্তব্য করেন।

আব্দুল মোমেন জানান, তিনি প্রকাশ্যে আইএলও’র সঙ্গে বাংলাদেশের ‘গঠনমূলক সম্পৃক্ততার’ চেতনায় এবং তাদের পারস্পরিক স্বার্থে এই পর্যবেক্ষণগুলো করেছেন। যেকোনো সময়ে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রতিক্রিয়া হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে যথাযথ কোর্স-সংশোধনের সুবিধা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, তবে আমরা আশা করবো- আইএলওসহ আমাদের প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক অংশীদাররা স্থানীয় পর্যায়ের জ্ঞান এবং অন্তর্দৃষ্টির মূল্য স্বীকার করবে। সবার সঙ্গে খাপ খায় এমন একটি মডেল নেবে। একতরফা নির্দেশনামূলক পদ্ধতি গ্রহণ করবে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান জীবনযাত্রার ব্যয়-সঙ্কট সমন্বয় করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তরুণ কর্মশক্তির জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপের সময় দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করতে সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি প্রসারিত করে।

তিনি বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার মুখে কিছু বাস্তবিক নীতি গ্রহণ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সুযোগ দিয়েছে।

এ সময় মন্ত্রী ২০০৮-০৯ সালের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় আন্তর্জাতিক নীতির আলোচনায় আইএলও’র পুনরুত্থান এবং প্রাসঙ্গিকতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা দেখতে চাই যে আইএলও তার প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করছে। কারণ আমরা আরো একাধিক সংকটকাল মোকাবিলা করছি।

সেমিনারে বক্তব্যে আইএলও-এর সহকারি মহাপরিচালক এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক চিহোকো আসাদা-মিয়াকাওয়া বলেন, আইএলও অনুসমর্থিত কনভেনশনের প্রয়োগে সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। আইএলও দক্ষতাভিত্তিক শাসনের পদ্ধতিকে সহযোগিতা করছে এবং আরো আধুনিকীকরণের প্রত্যাশা করছে। আইএলও এই অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, সরকার এবং সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আমরা সাধারণ লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। সার্বিক লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে এই সংকট থেকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরুদ্ধার অর্জন করা, যা সম্পূর্ণ অন্তর্ভুক্তিমূলক, পদ্ধতিগত এবং স্থিতিস্থাপক।