সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৬ জন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার বাদী সাভার থানার তৎকালীন এসআই ওয়ালী আশরাফ।
সোমবার ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন। তবে জেরা হয়নি।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। কিন্তু মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অধিকাংশ আসামি উচ্চ আদালতে আপিল করেন। উচ্চ আদালতের আদালতে আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার পর আজ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলায় রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা কারাগারে আটক রয়েছেন। অপর ৪০ আসামি জামিনে রয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক।ঐ ঘটনায় এক হাজার ১৩৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ঐ ঘটনায় সাভার থানার এসআই ওয়ালী আশরাফ ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটি জনিত হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার, ফ্যান্টম এপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের এমডি বজলুস সামাদ ও ইথার টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান।
২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।