‘বাংলাদেশ এখন মহামারি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে লড়াই করছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকিগুলি কেবল স্বল্প মেয়াদে সীমাবদ্ধ নয়, শ্রম ও মূলধন উভয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতের বড় উৎপাদনের দিকেও প্রসারিত। অর্থনৈতিক সঙ্কট করপোরাল এবং গৃহস্থালি ঋণ খেলাপির মাধ্যমে দেশ আর্থিক সংকটে রূপান্তরিত হতে পারে।’সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আইসিসি বাংলাদেশের ২৫তম বার্ষিক কাউন্সিলে আইএলও’র প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান এসব কথা বলেছেন।আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির মতো বাংলাদেশকে কাঙ্খিত জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি মূল সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, টেকসই রফতানি, সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ। বাংলাদেশে প্রায় ৭.৮ মিলিয়ন এন্টারপ্রাইজেজ রয়েছে যার ৯০ শতাংশই মাইক্রো এন্টারপ্রাইজেজ। জিডিপিতে এই মাইক্রো এন্টারপ্রাইজগুলোর অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ যার পরিমাণ প্রায় ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে এই মাইক্রো এন্টারপ্রাইজগুলো চাপের মধ্যে পড়েছে। উপরন্তু, অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রচন্ড ধাক্কা খেয়েছে। আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৩০ শতাংশ সম্পৃক্ত।আইসিসিবির নির্বাহী পর্ষদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হলে প্রধান রফতানি দেশগুলোতে বাণিজ্য অগ্রাধিকারসহ অন্যান্য সুবিধা হারাবে। সুতরাং বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রধান রফতানি দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির উপর জোর দিতে হবে।
কভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ধাপ ইতোমধ্যেই ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে যা অর্থনৈতিক মন্দাকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির মতো বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কাঙ্খিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। টেকসই প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে এবং সরবরাহ চেইনকে কার্যকরী ও ব্যয়-সাশ্রয়ী রাখতে এমএসএমইগুলি (ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ) সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি।বার্ষিক কাউন্সিলে আইসিসি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট বিজনেস আইকন লতিফুর রহমান; আইসিসি বাংলাদেশের নির্বাহী বোর্ডের সাবেক সদস্য ওয়ালিউর রহমান ভূঁইয়া ও আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক; অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মনজুর এলাহীর স্ত্রী শিক্ষাবিদ নীলুফার মনজুর; জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ একাধিক ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তাদের চিরশান্তি কামনায় দোয়া করা হয়।