সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এ নির্দেশনায় তল্লাশিচৌকি ও টহল জোরদারের কথা বলা হয়েছে। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও অপহরণের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার থানাগুলোয় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র ও তিনটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের তিনটি থানার ওসি শুক্রবার জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা পেয়ে তারা নিজেদের থানার আওতাধীন এলাকার ব্যাংকের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান। সেখানে নানা ধরনের ঘাটতি রয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি থানার একজন ওসি জানান, বৃহস্পতিবার একাধিকবার ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলা হয়। তার পর পুলিশ পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছে, কোনো কোনো ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে অস্ত্র নেই। আবার কোনো কোনো ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মীকে দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বদলে অন্য কাজ করানো হচ্ছে। ওসি বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়। বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে গত মঙ্গলবার রাতে হামলা করে অস্ত্রধারী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যরা। তারা অবশ্য টাকা নিতে পারেনি। গত বুধবার তারা বান্দরবানের থানচিতে হামলা করে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের শাখা থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে। এর পর বৃহস্পতিবার রাতেও থানচিতে থানায় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে বান্দরবানের আলীকদম থানার ডিম পাহাড়ের ২৬ মাইল এলাকায় পুলিশ ও সেনাদের যৌথ তল্লাশিচৌকিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এসব ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে কেএনএফ। বান্দরবানে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার ব্যাংকে লেনদেন সাময়িক স্থগিত করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তর সারা দেশেই নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে। ভোলার একটি থানার একজন ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নির্দেশনা পেয়ে তিনি ব্যাংকে গিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখেছেন। একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, ওই কর্মীর হাতে অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু তিনি নাকি অস্ত্র চালাতে জানেন না। ওসি বলেন, পরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তাকে নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। এ ছাড়া পুলিশও সতর্ক থাকছে।