সাতক্ষীরা জেলার একমাত্র স্থল বন্দর, ভোমরা বন্দর। ১৯৯৬ সালে এই বন্দরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের স্থল বন্দর গুলোর ভিতর তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর এটি। সাতক্ষীরার ভোমরা ও ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থল সীমান্তের সাথে সরাসরি স্থল পথের অবস্থান হওয়ায় পন্যবাহী মালামাল আমদানি রপ্তানিতে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছে বন্দরটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের যেকোন স্থান থেকে ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে মালামাল বহন ও যাত্রী পারাপারের গুরুত্বপূর্ন ষ্টেশনে পরিনিত হয়েছে। দেশের জাতীয় রাজস্ব খাত উন্নয়নে প্রতিনিয়ত ভূমিকা রেখে চলেছে বন্দরটি। যার ফলে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আমদানি রপ্তানির কেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে চলতি অর্থ বছরে আমদানি কম হলেও বেড়েছে রাজস্ব আদায়। বিগত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের চলতি মাস পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো তার চাইতে চলতি অর্থ বছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৬৬ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা।রাজস্ব আদায় ও আমদানি রপ্তানির বিষয়ে ভোমরা কাস্টমস এর ডেপুটি কমিশনার মোঃ এনামুল হক বলেন,সাতক্ষীরায় অবস্থিত ভোমরা স্থল শুল্ক বন্দর একটি স্বনামধন্য বন্দর। এই শুল্ক বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার থেকে ১৫শত জন পাসপোর্টধারী যাত্রী দু-দেশের মধ্যে যাতায়াত করে। বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল স্থল বন্দরের পরেই এই বন্দরের অবস্থান। প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারশত ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য, আবশ্যকীয় পণ্য ও ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পণ্য আমদানি হয়ে থাকে । এছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ১শত থেকে ১শত ৫০টি ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানী হয়ে থাকে। এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ও অন্যান্য পরিসেবা কোনরূপ প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আন্তরিকতার সাথে ও সৌহার্দ্যপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এছাড়া বিগত ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) ০৪ মাসে সর্বমোট ২৭ হাজার ৬ শত ২৬টি ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়িতে করে ১০ হাজার ০৯ শত ৩শ ৫৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। যার মাধ্যমে আদায়কৃত শুল্ককরাদির পরিমাণ ১৯৫,৩২,৫৬,৮৪৪/- (একশত পঁচানব্বই কোটি বত্রিশ লক্ষ ছাপান্ন হাজার আটশত চুয়াল্লিশ টাকা)। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) মোট ২৫ হাজার ০৪৩ টি ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়িতে করে ৮ লক্ষ ৬০ হাজার ৮শত ২ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে। যার মাধ্যমে আদায়কৃত শুল্ককরাদির পরিমাণ ২৬১,৭০,০০,১৯৮/- (দুইশত একষট্টি কোটি সত্তর লক্ষ একশত আটানব্বই টাকা)। অর্থাৎ গত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরে (জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) ০৪ মাসে পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা ২হাজার ৫শত ৮৩ টি কম ও পণ্য ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৫শত ৫২ মেট্রিক টন কম আমদানি হলেও শুল্ককরাদি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৬ লক্ষ ৯১ হাজার (ছেষট্টি কোটি একানব্বই লক্ষ টাকা), যার প্রবৃদ্ধির হার (+) ৩৪.২৫%। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই/২২ মাস থেকে অক্টোবর/২২ মাস পর্যন্ত রপ্তানিকৃত বাংলাদেশী পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যাঃ ৭ হাজার ৬শত ৬৭ টি ২০২০-২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ের রপ্তানিকৃত বাংলাদেশী পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যাঃ ৮ হাজার ২শত ৯৩ টি। রপ্তানিকৃত গাড়ির সংখ্যা ৮.১৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বর মাসে রাজস্ব আদায় আরও বাড়বে। এছাড়াও চলতি অর্থ বছরে লক্ষমাত্রার অর্ধিক রাজশ্ব আদায় হবে। ভোমরা স্থল শুল্ক স্টেশনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনায় কর্মরত কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করার ফলে ক্রমবর্ধমান হারে এই রাজস্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব আহরণ ও সংরক্ষণের স্বার্থে ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে স্থল বন্দর কতৃপক্ষ বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি।