জমি থেকে উত্তোলনের পর মাটির আবরণ লেগে থাকায় অপরিচ্ছন্ন থাকে কচুর মুখি। কচুর মূল থেকে আলাদা করে পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করলে সাদা ধবধবে হয়ে যায়। স্বল্প শ্রম ও অল্প খরচে ভালো ফলনের পাশাপাশি কয়েকগুণ বেশি দাম পাওয়ায় ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই সবজি ‘সাদাসোনা’ নামে পরিচিত পাচ্ছে কৃষকদের কাছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৩০ হেক্টর জমিতে বারি-১ জাতের কচুর মুখি আবাদ করা হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় কচুর মুখির বাম্পার ফলন হয়েছে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে জমিতে কচুর মুখির চারা রোপণ করা হয়। ছয় মাস পর থেকেই জমি থেকে কচুর মুখি উত্তোলন করা হয়। কৃষকরা জানান, আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে জমি থেকে কচুর মুখি উত্তোলন করে বিক্রি শুরু হয়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি মণ কচুর মুখি ২ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছে কৃষক। মাওহা ইউনিয়নের কৃষক শেখ সাদী বলেন, ৬০ শতক জমিতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে মুখি পেয়েছি ১৮০ মণ। প্রতি মণ ২ হাজার টাকা দামে ১৮০ মণ মুখি বিক্রি করেছি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। স্বল্প খরচ ও অল্প শ্রমে ভালো ফলনের পাশাপাশি কয়েকগুণ বেশি দাম পাওয়া মুখি আমাদের এলাকায় ‘সাদা সোনা’ পরিচিতি পেয়েছে। কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, আগে এই অঞ্চলের কৃষকরা জমিতে দুই মৌসুম ধান চাষ করে জমি পতিত রাখতো। কিন্ত গ্রামের কৃষক শেখ সাদী পতিত জমিতে মুখি আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়ায় এখন গ্রামের অন্য কৃষক ও যুবকরাও মুখি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। অল্প খরচে ভালো ফলন পাওয়ায় এই সবজি চাষ করে অনেকেই ভাগ্য বদল করেছে। কড়মড়িয়া গ্রামের কৃষক আকবর আলী বলেন, দশ শতক জমিতে মুখির আবাদ করেছি। জমি প্রস্তত, চারা, সার, সেচ ও নিড়ানী বাবদ খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকার মতো। মুখির ফলন হয়েছে চোখে পড়ার মতো। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৩০ মণের মতো মুখি উত্তোলন করতে পারবো। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, গৌরীপুরের কৃষকরা বারি ১ জাতের কচুর মুখি আবাদ করে বাম্পার ফলন পেয়েছে। আমাদের দেশে ‘চিংড়িকে সাদাসোনা, হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। কিন্ত গৌরীপুরে কৃষকরা কচুর মুখি চাষ করে খরচের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি লাভ হওয়ায় কচুর মুখিকে ‘সাদাসোনা’ হিসাবে আখ্যায়িত করছে। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই সবজি চাষে দিনদিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।