বিএনপির সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গতকাল শান্তি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন। ময়মনসিংহ বিভাগ বাদে দেশের প্রতিটি উপজেলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ তিনটি স্থানে পৃথক সমাবেশ করে। এতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
সমাবেশগুলোয় বক্তারা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই থাকবেন। আর সেই নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নিতে হবে। নইলে বিএনপি বলে কোনো রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব থাকবে না। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, বিদেশিরা বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এমন দুঃস্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই। বিএনপি আসুক অথবা না আসুক নির্বাচন নির্দিষ্ট সময় অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন দাবি নিয়ে ৫৪ দল গঠন করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তবে তারা সফল হবে না। বিএনপির ডাকে জনগণের সাড়া নেই বলে তিনি দাবি করেন। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নিজেরাই খালেদা জিয়াকে অপসারণ করে তারেক জিয়াকে আনার চেষ্টা করছে। খালেদা জিয়াকে বিএনপি নেতারা মাইনস করছেন, এর দায় একসময় বিএনপিকেই দিতে হবে। এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম, মহানগরী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সহসভাপতি নুরুল আমিন রুহুল এমপি প্রমুখ। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা যাদের, আসেন নির্বাচন করেন। জনগণ যাকে মেনে নেবে, সে-ই ক্ষমতায় যাবে। জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি বেনজির আহমেদ। সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আবদুল বাতেন মিয়া, সাহাবুদ্দিন ফরাজি, মাহবুবুর রহমান, আলমগীর হোসেন, মিজানুর রহমান ভুইয়া কিসমত, ইউসুফ আলী চৌধুরী সেলিম, ফারুক হাসান তুহিন প্রমুখ। ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবেশ করেছে। নগরবাসীকে ঘরে বসে হোল্ডিং ট্যাক্স অনলাইনে প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, এটাই স্মার্ট বাংলাদেশ। নৌকার কোনো ব্যাক গিয়ার নেই শুধু সামনে এগিয়ে যাবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, করপোরেশনে দালালদের দৌরাত্ম্য দিনে দিনে বাড়ছে। প্রশাসনিক জটিলতার কারণে নাগরিকরা সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ঢাকা উত্তর সিটিতে সশরীরে না গিয়ে সেবা পেতে অনলাইনে আবেদন করার পরামর্শ দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচিতে জনগণের কোনো স্বার্থ নেই। তারা সাজাপ্রাপ্ত নেত্রী খালেদা জিয়া ও পলাতক তারেক রহমানের ইস্যুতেই রাজনীতি করছে। যে কারণে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কাদের খান, মিজানুর রহমান মিজান, আমিনুল ইসলাম, মিজানুল ইসলাম মিজ প্রমুখ। রাজধানীর কদমতলী থানায় শান্তি সমাবেশ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এতে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ দলীয় নেতারা অংশ নেন।