ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারের বাড়ি-ঘর ও দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় একটি পরিবারিক মন্দিরও ভাঙচুর করে তারা। গত বুধবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাতে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের মোত্তারটেক এলাকায় এঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারের সদস্যদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরে খবর পেয়ে সাভার উপজেলা প্রশাসন ও আশুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মোত্তারটেক এলাকার কেশব লাল নামের এক ব্যক্তি অনেক বছর আগে প্রায় একচল্লিশ শতাংশ জমি ওই এলাকার চারটি হিন্দু পরিবারকে বসবাস করার জন্য দিয়ে ভারতে চলে যান। পরে সেই থেকে চারটি হিন্দু পরিবারের সদস্যরা সেখানে বসবাস করে আসছিলো। অপরদিকে, একটি পক্ষ জাল দলিল তৈরি করে কোটি টাকা মুল্যের ওই জমি কিনে নিয়েছে এই মর্মে কিছু লোক গতকাল ওই জমির চার পাশে বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে ও তাদেরকে জমি ছেড়ে বাড়ি-ঘর অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে রাতে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই হিন্দু ধর্মবলম্বী পরিবারের মাঝে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ভাঙচুর ও পারিবারিক মন্দির ভাঙচুর করে লুটপাট করে পালিয়ে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা কিছু লাউ গাছও কেটে ফেলে। পরে সকালে তারা ঘুম থেকে উঠে বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে তান্ডব চালানোর ঘটনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভুক্তভোগী রেখা রাণী নামের এক নারী জানান, দুর্বৃত্তরা যখন হামলা চালায় তখন তাদের বলা হয় বাড়ি ঘর ছেড়ে না গেলে সবাইকে অস্ত্রের মুখে হত্যা করা হবে। দুর্বৃত্তরা এসময় একটি দোকানের মালামাল পুকুরে ফেলে দেয় বলেও জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে খবর পেয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গণমাধ্যমকে সাভারের ইউএনও মাজহারুল ইসলাম জানান, এখানে কয়েকটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তার পাশে কিছু দোকান ছিলো, সেগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। সেগুলো আলামত হিসেবে আছে। আর ছোট্ট একটি পারিবারিক মন্দির ছিলো সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবক’টি ঘটনাই পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই দোষীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো। এব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, আমরা ঘটনাস্থলে এসে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছি। তবে তদন্তের স্বার্থে দোষীদের নাম আমরা গোপন রাখলাম। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে সব জানানো হবে। এঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।