ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও কখনো নেতৃত্ব নেওয়ার চিন্তা ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের স্মরণসভায় অংশ নিয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকে রাজনীতি করি। কলেজে ছাত্রলীগ করতাম, কলেজে ভিপিও ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত ছিলাম। কখনও নেতৃত্ব নেওয়ার চিন্তা করিনি। দলের জন্য যখন প্রয়োজন হয়েছে, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটাই পালন করেছি।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রয়াত মালেকের অবদান ছিল জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘পঁচাত্তরের পরেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলাম। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে হবে- তখনও সেটা ভাবিনি। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিতে ডা. মালেক আমাকে চাপ দিতেন। আমি দলের দায়িত্ব নেওয়ায় ডা. মালেকের অনেক অবদান রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডা. মালেকের সঙ্গে আমাদের পারিবারিকভাবে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি সবসময় রাজনীতি সচেতন ছিলেন। দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তার ভূমিকা ছিল। মুক্তিযুদ্ধে নিজের হাতে অস্ত্র তুলে প্রতিরোধ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর মুশতাক সংসদ সদস্যদের বৈঠকে ডাকে। তবে ডা. মালেকসহ অনেক সংসদ সদস্য সে বৈঠকে যোগ দেননি। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। সেখানে টিকতে না পেরে তিনি ভারতে চলে যান।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ডা. মালেকের মধ্যে কোনো অহমিকা ছিল না। তিনি হোমিওপ্যাথির প্র্যাকটিস করতেন, বিনামূল্যে ওষুধও দিতেন। তিনি অনেক বৈরি পরিবেশে জাতির পিতার আদর্শকে এগিয়ে নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের মধ্যেও সেটি দক্ষভাবে ছড়িয়ে গিয়েছেন।’
আলোচনায় আরও অংশ নেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল খালেক, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান লাল্টু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এস এ মালেক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-১ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।