শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের হলদীগ্রাম চৌরাস্তায় সড়কের উপর বাজার, প্রভাবশীদের দখলে খাস জমি। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল বাজার ও সবজি বিক্রির পল্লী হিসেবে খ্যাত হলদীগ্রাম (গারোকোনা) বাজারের সরকারী ১ একর ৭৫ শতাংশ জমি প্রভাবশালী একটি মহলের বেদখলে রয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় হলদীগ্রাম,গুমরা,ফাকরাবাদ, মানিককুড়া, কুছাইকুড়া, নলকুড়া ও সমশ্চুড়া গ্রামের শতশত কৃষক তাদের উৎপাদিত শাকসবজি বিক্রির উদ্দেশে উক্ত বাজারে আনা হয়। স্থানীয় পাইকার সহ জেলা শহরের পাইকারগণ উক্ত বাজার থেকে প্রতিদিন কয়েক মেট্রিক টন সবজি ক্রয়ের পর রপ্তানী করেন ঢাকার কাওরান বাজার, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
কিন্ত বাজারের নির্ধারিত জায়গা প্রভাবশালী একটি মহলের দখলে থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতিদিন বর্ডার সড়কের উপর বসছে বাজার।
এতে যান জটসহ জনসাধারনের চলাচলের মারাত্মক বিঘ্ন ও বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। এ কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে ওই বাজারে।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ আলী ওরফে আব্দুল আলী বাদী হয়ে শেরপুর সহকারি জজ আদালতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক, শেরপুরকে বিবাদী করে রেকর্ড সংশোধনী ১২০/২০১৭ নং একটি মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে মামলাটি ঝিনাইগাতী সহকারি জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। যাহার মোকদ্দমা নং- ২৪২/০২১ অন্য প্রকার। বাদীর দাখিলকৃত ১৯৬৭ সনের ২৫১৮ নং দলিলটি জাল প্রমাণিত হয়। সে কারণে আদালত মামলাটি গত ১৩ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে খারিজের আদেশ প্রদান সহ উক্ত দলিলটি আদালতের সেফ কাস্টরিতে জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত ১৬ এপ্রিল২০২২ইং তারিখে উক্ত বাজারের ১একর ৭৫ শতাংশ খাস জমি পরিমাপ করে তার চারিপাশে লাল নিশান টাঙ্গিয়ে দেন সংশ্লিষ্ট ভুমি কর্মকর্তারা। লাল নিশানাভুক্ত জমির বিআরএস দাগগুলো হচ্ছে, ১৩২,১৩৩,১৩৫,১৪১,১৪২ ও ১৪৩।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই রাতের অন্ধকারে “লাল নিশান” উদাও হয়ে যায়। অজ্ঞাত কারণে ভেস্তে যায় সরকারী বাজারের খাস জমি উদ্ধারের তৎপরতা। অপরদিকে বেদখলকারী জৈনক আজিজুর রহমান সম্প্রতি ১৫শতাংশ খাস জমিতে মাটি ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন।
বাজার ইজারাদার আব্দুস সালাম লেন, হলদীগ্রাম চৌরাস্তা বাজারটি প্রায় ৫ লক্ষ টাকা রাজস্ব্য জমা দিয়ে বাজারটি ইজারা নিয়েছি।
কিন্তু সড়কের উপর বাজার বসায় ক্রেতা বিক্রেতারা ঠিকমতো জমা দিতে চায়না। এ নিয়ে প্রায়শই তাদের সাথে ঝগড়া করতে হয়। তিনি আক্ষেপের সাথে আরো জানান, এ বাজারটি বিপরীতে ১ একর ৭৫ শতাংশ জমি থাকা সত্বেও সড়কের উপর বাজার বসা দু:খজনক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ বলেন, ” বাজারটি শুরু থেকেই সড়কের উপর চলে আসছে। এটি একদিনে সড়ানো সম্ভব নয়। স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতা নিয়ে সরকারি জমি উদ্ধার করে বাজারটি সড়কমুক্ত করা হবে”।
সরকারি ১একর ৭৫শতাংশ জমি দখলমুক্ত করে সেখানে হলদীগ্রাম বাজার স্থাপনের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।