যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত হলো উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ত্রিনিয়া হাসানের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান। স্থানীয় সময় শনিবার (২৪ ডিসেম্বর)নিউ ইয়র্কের উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে নিউ ইয়র্ক প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে বিনোদন সংস্থা শো টাইম মিউজিক। কনকনে ঠান্ডা আর বছরের প্রথম হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা উপেক্ষা করে নিউ ইয়র্কের শত শত দর্শকশ্রোতা উপস্থিত হয়ে উপভোগ করেন নতুন প্রজন্মের কন্ঠশিল্পী ত্রিনিয়া হাসানের মনমাতানো গান।
বিনোদন সংস্থা শো টাইম মিউজিক স্বত্বাধিকারী আলমগীর খান আলমের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শনিবার রাত ৮টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে ত্রিনিয়া হাসানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা।
নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকরা সপরিবারের উপস্থিত হয়ে সঙ্গীত সন্ধ্যা উপভোগ করেন। ত্রিনিয়া সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে প্রায় ২৩টি গান গেয়ে শোনান উপস্থিত দর্শকশ্রোতাদের। অনুষ্ঠানের মাঝে উপস্থিত দর্শকরা তাকে ভারতীয় জনাপ্রিয় শিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের সাথেও তুলনা করেন। প্রায় প্রতিটি গানের পরই দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা মিলনায়তন।
প্রবাসের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মাসুদ রহমান, লিমন চৌধুরী, সাইদুজ্জামান রীড, কামরুজ্জামান বকুল ও শাহ মাহবুবের সাথে দ্বৈত কন্ঠের গানগুলি খুবই চমৎকার ছিল। অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথি এবং দর্শকদের সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। পুরো অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনায় ছিলেন প্রবাসের দুই জনপ্রিয় উপস্থাপিকা সাদিয়া খন্দকার এবং শারমিনা সিরাজ সোনিয়া।
শো টাইম মিউজিকের এবারের টাইটেল স্পনসর ছিলেন নুরুল আজিম(ইস্টার্ণ ইনভেস্টমেন্ট), গ্র্যান্ড স্পন্সর শাহীন চৌধুরী, ফাহাদ সোলায়মান (ফাউমা ইনোভেটিভ ইঙ্ক)এবং ডা. চৌধুরী হাসান। এছাড়াও প্রিমিমাম সুপারমার্কেট ও রেস্তোরাঁর বাবু খান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আহসান হাবিব, মনিকা রায় চৌধুরী, আবদুর রশিদ বাবু, রেদওয়ান হক, ইমিগ্রান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের কর্ণধার গিয়াস আহমেদ, এমএস গ্লোবালের তারেক হাসান খান, প্যাসিফিক গ্রুপের এমডি খালেক, সারওয়ার প্রেমেল অফ ফ্রেশ ফুড, দিলিপ অফ ডিপ্লোমাট ফ্যাশন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম ও মাকসুদুল হক চৌধুরী্সহ সকল পৃষ্ঠপোষকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন শো টাইম মিউজিকের আলমগীর খান আলম।
উল্লেখ্য, ত্রিনিয়া হাসান বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের একটি সাংস্কৃতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। তাদের পরিবারের প্রায় সবাই গায় গেয়ে থাকেন এবং গানের প্রতি তাদের রয়েছে অনুরাগ। ত্রিনিয়ার সঙ্গীতের হাতেখড়ি তার বাবা জিয়াউল হাসানের কাছ থেকে। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং বাংলাদেশ বেতারের একজন সঙ্গীত পরিচালক।
ত্রিনিয়া বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্লোবাল বিজনেস নিয়ে পড়াশোনা করছেন।
বাংলদেশে অবস্থানকালে প্রায় ১২ বছর বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে (যেমন বাংলালিংক, আর-প্যাক বাংলাদেশ) কাজ করেছেন ত্রিনিয়া। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কে্র ম্যানহাটনে অবস্থিত বড় গার্মেন্ট এক্সেসরিজ/ব্র্যান্ডে প্রোডাকশন ও প্যাকেজিং সমাধান কোম্পানি আর-প্যাক ইন্টারন্যাশনালে প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত তিনি যেখানেই গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন কোথাও দ্বিতীয় স্থান লাভ করেননি। এমনকি তার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতায়ও।
শিল্পকলায় (নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা)তে অনেক শো করেছেন। বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি রেডিও স্টেশনেও অনুষ্ঠান করেছেন অনেকবার। ২০২১ সালে উত্তর আমেরিকার সেরা গায়ক হিসাবে ঢালিউড পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও সেরা গায়ক হিসাবে এনআরবি পুরস্কার এনওয়াই ২০২২ টেক্সাস, ওকলাহোমা এবং মিশিগান ইত্যাদি থেকে অন্যান্য পুরস্কার পেয়েছেন ত্রিনিয়া।