একদিন আগেই রাশিয়া থেকে প্রায় ৫০ লিটার পরিশোধিত তেল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। এটির মধ্য দিয়ে দেশটি থেকে তেল আমদানির বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়েছে সরকার।
কাস্টমস থেকে ছাড়করণের পর সেই নমুনা তেল যাবে চট্টগ্রামে। দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ বিষয়ে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা।
বিপিসি সূত্র জানায়, রাশিয়ার শীর্ষ তেল কোম্পানি রোজনেট পরিশোধিত তেল আনার প্রস্তাব দিলেও তা আসলে পুরোপুরি পরিশোধিত নয়। ব্যবহারের জন্য এটি আবার পরিশোধন করতে হবে। নমুনা পরীক্ষার পর বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে। এরপর দাম ও অন্যান্য খরচ নিয়ে আলোচনা হবে।
রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তেলের মান, ব্যবহারের উপযোগিতা, দাম, আনার খরচসহ বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে দেখছে বিপিসি।
জানা গেছে, রাশিয়ার ওপর আমেরিকাসহ ইউরোপের নানা রকম নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় যেকোনোভাবেই তেল কেনার গ্রাহক খুঁজছে দেশটি। এ মাসের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশের কাছে আবারো পরিশোধিত তেল বিক্রির প্রস্তাব পাঠায় রাশিয়ার তেল উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানি রোজনেট। আগে তেল কেনায় আগ্রহী না হলেও এখন বিষয়টি ভেবে দেখছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আলোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে বিপিসি। রাশিয়ার পাঠানো নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেই তেল কিনে বাংলাদেশ পুষিয়ে উঠতে পারবে কিনা- এ বিষয়ে আলোচনা করবে কমিটি। এরপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড বর্তমানে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত থেকে আনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) শোধন করে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ বিভিন্ন রকম জ্বালানি তেল উৎপাদন করে। বছরে ১৫ লাখ টন তেল শোধনের সক্ষমতা আছে তাদের। এ থেকে বছরে ৬ লাখ টন ডিজেল পাওয়া যায়। আর দেশে ডিজেলের চাহিদা বছরে ৪৬ লাখ টনের মত। মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশ রাশিয়া থেকে কম দামে জ্বালানি তেল কেনা শুরু করে। গত মে মাসে বাংলাদেশকেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয় রাশিয়া। তবে বাংলাদেশের আগ্রহ পরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়ে, যা সরবরাহে সম্প্রতি প্রস্তাব দিয়েছে মস্কো।