মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (নারকোটিক্স)।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্টদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক। নির্দেশনা অনুযায়ী দেশব্যাপী অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

আজ সকাল থেকে একাধিক টিমের মাঠে নামার কথা রয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নারকোটিক্সের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মাদক নিরাময় কেন্দ্রের অন্দর মহলের নানা অনিয়ম তুলে বৃহস্পতিবার  ‘রোগী পেটাতে ভাড়া করা হয় বাউন্সার’- শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার অনলাইনে জরুরি মিটিং আহ্বান করেন।

ওই মিটিং থেকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়। আজ থেকে শুরু হওয়া সাঁড়াশি অভিযান মহাপরিচালক নিজেই মনিটরিং করবেন বলে জানা গেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের চিকিৎসা পুনর্বাসন শাখার পরিচালক মু. নুরুজ্জামান শরীফ  বলেন, লাইসেন্সপ্রাপ্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোর অনিয়ম ক্ষতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে মহাপরিচালক নির্দেশনা দিয়েছেন।

এজন্য একাধিক টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি নিরাময় কেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেবা মানসম্পন্ন না হলে কোনো কেন্দ্র চলতে পারবে না।

সূত্র জানায়, রাজধানীতে মোট ১০৫টি নিরাময় কেন্দ্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত। এর মধ্যে হাতেগোনা ৪-৫টি প্রতিষ্ঠানে সেবার মান সন্তোষজনক। বাকিগুলোতে সেবা বলতে তেমন কিছুই নেই। এমনকি অনেক কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও রোগীদের ওপর নির্যাতন চালানোর প্রমাণিত অভিযোগ রয়েছে।

রাজধানী ছাড়া জেলা শহরগুলোতে যেসব কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। বহু নিরাময় কেন্দ্র মাদকাসক্তির চিকিৎসার নামে মানসিক রোগের চিকিৎসা শুরু করেছে। যথাযথ পর্যবেক্ষণের অভাবে লাইসেন্স ছাড়াই ব্যাঙের ছাতার মতো পাড়া-মহল্লায় এ ধরনের নিরাময় কেন্দ্র গজিয়ে উঠেছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, লোকবলের সীমাবদ্ধতার কারণে নিরাময় কেন্দ্রগুলো যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায় না। এ সুযোগে অনেক প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের অনিয়ম করে যাচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে যে সব প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম পাওয়া যাবে সেগুলো বন্ধ করে দেব।