দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র আট দিন বাকি থাকলেও বিদ্যমান সংকট উত্তোরণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ বসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, ৭ তারিখ অনেক দূরে আছে, কথায় আছে দিল্লি দূর অস্ত। এখনো সময় আছে সংলাপে বসুন। আপনারা ভাবুন, চিন্তা করুন, আলোচনায় বসুন, সংলাপ করুন। এই হিংসাত্মক সাংঘর্ষিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুন। আপানাদের অনুরোধ এই কারণে যে, আপনারা সরকারে আছেন, কাজেই মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে দায়িত্ব সেটা কিন্তু সরকারের ওপর বর্তায়। গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মঈন খান। ক্ষমতা হারানোর ভয়েই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, আজকে যদি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, আওয়ামী লীগ হয়ত ভয় পাচ্ছে, সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে যাবে। সে কারণেই তো তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিচ্ছে না। যে যত কথাই বলুক না কেন, মূল কারণ তো এটাই। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে মঈন খান বলেন, ‘আমি খোলাখুলিভাবে আওয়ামী লীগের কাছে প্রশ্ন করছি, আপনাদের ভয় পাবার কারণ কী? এই নির্বাচনটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করেন, দেখবেন যে পরবর্তী সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে এমনই হতে পারে যে, বাংলাদেশের মানুষ আবার খুশি হয়ে আপনাদের ভোট দেবে। বাংলাদেশের মানুষের যে চরিত্র এবং তাদের মনস্তাত্ত্বিক যে অবস্থা, সেটা আপনারা উপলব্ধি করে বাংলাদেশে আপনারা রাজনীতি করুন, আমি তাদের কাছে এই অনুরোধ জানাব।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের স্বার্থে সংঘাত বাদ দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিতে ফিরে আসতে হবে। এ দেশের মানুষ যে কারণে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল, সেই গণতন্ত্রকে আমরা যাতে বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি, আজকে সেই আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারের সমালোচনা করে মঈন খান বলেন, আজকের বাংলাদেশে কিন্তু সরকার আরও একধাপ এগিয়ে গেছে। এখন যেটা হচ্ছে সেটা হলো টোটালিটারিয়ান। তারা কিন্তু শুধু মানুষকে বাধা দিচ্ছে না- এটা করতে পারবে না, ওটা করতে পারবে না। আরও একধাপ এগিয়ে বলছে যে, তোমাকে এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে, সেটা করতে হবে। কিন্তু আজকের যে পরিবেশ-পরিস্থিতি, সেখানে কিন্তু মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। কোনো আধুনিক সমাজ এভাবে বাসবাস করতে পারে না। সাংবাদিকদের মধ্যকার বিভেদ-বিভক্তি দূর করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের সঞ্চালনায় দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, এমএ আজিজ, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, আবদুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গণি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।