পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে স্থানীয় পর্যটকরা ভিড় করলেও জেলার বাইরে থেকে আশানুরূপ পর্যটক যায়নি। তবে ঈদের প্রথমদিন পর্যটকদের ভিড় কম থাকলেও দ্বিতীয় দিন এবং আজ তৃতীয় দিন পর্যটকদের কিছুটা ভিড় চোখে পড়ে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। রোববার (২ জুলাই) সৈকত এলাকায় দেখা গেছে স্থানীয় অনেকেই ঘুরতে এসেছে। সরেজমিন দেখা যায়, তাদের অনেকেই নেচে-গেয়ে আনন্দে মেতেছেন। অনেকে আবার প্রিয়জনদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। কেউবা সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত। কেউবা উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। অনেকেই ঘুরছেন ঘোড়ায় চড়ে কিংবা ওয়াটার বাইকে অথবা স্পিডবোটে। এক কথায় বলা চলে সমুদ্রের পানিতে উল্লাসে মেতেছেন আগত পর্যটকরা। পর্যটন এলাকার ব্যবসায়ীদের দাবি, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর কম সংখ্যক পর্যটক এসেছেন কুয়াকাটায়। অন্যদিকে পর্যটকরা অভিযোগ করেন, এই এলাকার হোটেলগুলোয় অন্য সময়ের তুলনায় খাবারের দাম অনেক বেশি রাখা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ঈদের ছুটিতে প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো বুকিং থাকলেও দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির আবাসিক হোটেলগুলোর বেশিরভাগই খালি। কিন্তু ঝিনুক, আচার, শুঁটকিসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের অভিমত, বেচাকেনা খুবই ভালো হচ্ছে। এছাড়া খাবার হোটেলগুলোতেও ভিড় ছিল লক্ষণীয়। যশোর থেকে আশা সেলিম চৌধুরী বলেন, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কুয়াকাটা ভ্রমণে এসেছি। এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সকলে মিলে উপভোগ করছি। মাদারীপুর থেকে আসা পর্যটক সাইদুর রহমান বলেন, কুয়াকাটার সবকিছু ভালো। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে এখানে এসে আনন্দ করছি। তবে হোটেলগুলোতে খাবারের দাম খুব বেশি,কিন্তু সেটা নিয়ে আমাদের অভিযোগ নেই। অভিযোগ একটাই খাবারের মান আরো ভালো হওয়া উচিত। আবাসিক হোটেল সাগর এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজ সাগর বলেন, আমাদের হোটেলের অনেক কক্ষ এখনো ফাঁকা। তিনি দাবি করেন, প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেলগুলোতে পর্যটক থাকলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলের অধিকাংশ কক্ষই খালি। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও কুয়াকাটায় অনেক পর্যটক এসেছেন। তবে তাদের মধ্যে অধিকাংশ স্থানীয় পর্যটক। যার জন্য প্রথম শ্রেণির হোটেল ব্যতীত কুয়াকাটার অধিকাংশ হোটেলই ফাঁকা। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সৈকত এলাকাসহ দর্শনীয় স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘোরাঘুরিসহ সমুদ্রে গোসল ও আনন্দ উপভোগ করছেন।