দুর্নীতি মামলায় দণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তিতে রাজনীতি করা নিয়ে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব ইন্ট্যারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এই দুটি শর্ত ছাড়া আর কোনো শর্ত নাই। আপনারা প্রশ্ন করেছেন উনি রাজনীতি করতে পারবেন কি না। আমি সত্য বলেই বলেছি, রাজনীতি করার ব্যাপারে কোনো শর্ত নাই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয় বিএনপি নেত্রীর। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় তার। সব মিলিয়ে তার সাজা হয় ১৭ বছর।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন বিএনপি প্রধান। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন নিয়ে যান। আর সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ওই বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এরপর গুলশানের বাসায় ফিরোজায় ওঠেন। সেখানে থাকার পর বেশ কয়েকবার অসুস্থ হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হলে তাকে ফের বাসায় আনা হয়।
বিএনপি ক্ষমতায় এলে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে বলে দলটির নেতারা বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ১৯ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্তে রাজনীতির কথা নেই। তবে তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
চার দিন পর বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কেউ দুই বছরের বেশি শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। খালেদা জিয়া দুই বছরের অনেক বেশি সময় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সুতরাং তার নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।
একই দিন খালেদার রাজনীতি করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুটি শর্ত ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আর কোনো শর্ত নাই। আমি সত্য বলেই বলেছি, রাজনীতি করার ব্যাপারে কোনো শর্ত নাই।
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক চাপ নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে কোনো আন্তর্জাতিক চাপ নেই। জনগণের কাছে যে দায়বদ্ধতা আছে সে দায়বদ্ধতা থেকে আমরা একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাই।
মন্ত্রী আরও বলেন, মানুষ যদি ম্যান্ডেট না দিত তাহলে আমরা ২০১৪ সালে এবং পরে ২০১৮ সালে আমরা সরকার চালাতে পারতাম না। জনগণের ম্যান্ডেট আছে বলেই আমরা সরকার চালাচ্ছি। আমরা হ্যাঁ-না ভোটের মতো নির্বাচন করব না। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, নিরপেক্ষ হবে।