’৫০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে’ বিএনপির এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি দাবি করেছেন, মামলা তো দূরের কথা এই পরিমাণ নেতাকর্মীই নেই বিএনপির।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বর্ণযুগ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ৫০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলার দাবিকে অযৌক্তিক, বানোয়াট ও মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘এগুলো বিএনপির মিথ্যাচারের গল্প। মামলা পরের কথা তাদেরতো এত নেতাকর্মীই নেই।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্যাতন করেছে, মামলা দিয়েছে। মায়ের জানাজা এমনকি ঈদের নামাজে অংশ নিতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের আগে পাঁচশ স্কুল পুড়িয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়েছে, মানুষ পুড়িয়েছে। কী বীভৎস দিন! কত নিষ্ঠুর বিএনপি!’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্রকে হত্যাকারী বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না, কারণ তাদের ঘরেই তো গণতন্ত্র নেই। ভোট জালিয়াতি কিংবা হা-না ভোট কারা চালু করেছিল তা সবাই জানে।’

সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের নবজাতককে গলাটিপে মেরে ফেলেছে। এদেশে ভোট জালিয়াতি, রাষ্ট্রপতি নিয়ে হ্যাঁ-না ভোট, দলীয় লোক আজিজকে নির্বাচন কমিশনের প্রধান বানানো, মাগুরা মার্কা নির্বাচন, এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বানিয়েছিল বিএনপি যার জন্য ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি হয়েছিল।’

তত্ত্বাবধায় সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার আর কোনো উপায় নেই জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই হবে।’

কাদের বলেন, ‘দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরবে না। যে যত চেষ্টাই করুক, সংবিধানে অনড় থাকবে সরকার। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার পরিবর্তনের সুযোগ নেই। ক্ষমতার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।’

‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বর্ণযুগ’ শীর্ষক বইটি রচনা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান এমপি। বই রচিত হয়েছে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ শেখ হাসিনা সরকারের তিন মেয়াদের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে।

বইটির ওপর আলোচনা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘১৪ বছরের সফল নেত্রী শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক পরিবর্তনের আধুনিক রূপকার শেখ হাসিনা যিনি ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে সৃষ্টির কথা ভাবেন। শেখ হাসিনা পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবেন না। তিনি ভাবেন আগামীর প্রজন্মের কাছে সুন্দর একটি দেশ উপহার দেবার কথা।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা বাধা উপেক্ষা করে দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী ও জেল হত্যার বিচার হয়েছে। দেশে প্রথম আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমেই গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ত্রুটিমুক্ত করছে।’

বইয়ের লেখক অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নানের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ও জাকিয়া তাবাসসুম, গ্রন্থের সম্পাদক সাংবাদিক ফিরোজ আলম খানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।