বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর অধীনে ফরিদপুরে ডাল জাতীয় ফসলের আধুনিক উৎপাদন কলাকৌশল ও বীজ সংরক্ষণ বিষয়ে র্শীষক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ফরিদপুর অঞ্চলের ডাল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের র্অথায়নে এবং ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (সগবি) এর আয়োজনে, বুধবার ফরিদপুর মসলা গবষেণা উপ-কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ হল রুমে কৃষকদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্র (বিএআরআই) প্রকল্প পরিচালক ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ছালেহ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) ড. মুহা. বশিরুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা ঈশ্বরদী ডাল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. মহিউদ্দিন, ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ স্বপন কুমার খাঁ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ (বারি) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিম আহম্মেদ। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপ-কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে মাদারীপুর আঞ্চলিক ডাল গবেষণা কেন্দ্রের, ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপ-কেন্দ্র ও সরেজমিন গবেষণা বিভাগের অন্যান্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ এবং স্থানীয় সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক সহকারী ও প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের কৃষিতে ডাল ফসল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ডাল মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও পুষ্টিহীনতায় ভোগা বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আমিষের ঘাটতি পুরণ করে আসছে। ডাল ফসলে আমিষের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০%। এজন্য ডালকে গরিবের মাংস বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ডাল ফসলের আবাদী জমির পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ হেক্টর যা মোট আবাদি জমির শতকরা ১২ ভাগ এবং উৎপাদিত ডালের পরিমান ১০ লক্ষ মেট্রিক টন। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিদিন একজন মানুষের ৪০-৪৫ গ্রাম ডাল খাওয়া উচিত, সে তুলনায় আমরা ভক্ষণ করি মাত্র ১৭ গ্রাম। অপর্যাপ্ত উৎপাদনের জন্য এদেশের জনগণের মাথাপিছু দৈনিক ডালের প্রাপ্যতা খুবই কম। কৃষকের ডাল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ডালের অনেক লাগসহ জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ ধরনের জাত ও প্রযুক্তি সম্বন্ধে কৃষককে জানানোর জন্যই এই কৃষক প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। ফলে এ প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে ডাল ফসলের কৃষিতাত্তিক ব্যবস্থাপনা, ক্ষতিকর পোকামাকড় ও রোগ-বালাই সনাক্তকরন এবং তাদের বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কৃষক জানতে পারবে। বারি উদ্ভাবিত নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্বারা ডাল ফসল আবাদের জন্য প্রধান অতিথি কৃষকদের অনুরোধ করেন। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে মোট ৩০ জন কৃষক ও কিষাণী অংশগ্রহন করেন। কৃষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারিগরী পর্বে পাওয়ার পয়েন্ট এর মাধ্যমে তাত্ত্বিক উপস্থাপনা দেখানো হয়। ডাল ফসলের আধুনিক প্রযুক্তি যেমন নতুন নতুন ফসলের সংযোজন, কৃষিতাত্ত্বিক ব্যবস্থাপনা যেমন সার, সেচ ও আন্ত.পরিচর্যা, বালাই ব্যবস্থাপনা, ফসল সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ প্রযুক্তি সম্পর্কে বক্তারা আলোচনা করেন। বক্তব্য প্রদান শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে ডাল ফসলের উৎপাদন ও সংরক্ষণে আগ্রহী করতে উপস্থিত কৃষক-কৃষাণীদের মধ্যে ডাল ফসলের উৎপাদন ও সংরক্ষণে আগ্রহী করতে আধুনিক স্প্রেয়ার, চাটাই ও ড্রাম সহ কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়।