ফরিদপুরে চলছে তীব্র নদী ভাঙন। এ ভাঙনে জেলা সদরের প্রায় তিন শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া চারটি গ্রামের রাস্তা, স্কুল, মসজিদ, ক্লিনিক ও ৩ কোটি টাকার সরকারি গোলাডাঙ্গী ব্রিজটি এখন হুমকির মুখে।
নদী ভাঙনে গত ছয়দিনে ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিচর ইউনিয়নের ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গীর প্রায় ৭০-৮০টি বাড়ি ভেঙে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে কমপক্ষে দেড়শো পরিবার চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
নদী ভাঙনকবলিত দুলাল মেম্বার, সোহরাব তালুকদার, সিদ্দীকুর মিয়া, ফরহাদ হোসেন জানান, এ নিয়ে তিনবার তাদের বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। প্রচন্ড ভাঙনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গীর একমাত্র সড়কের প্রায় ৭০০ গজ রাস্তা ভেঙে নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে। গত তিনমাস ধরে জেলা সদরের নর্থচ্যানেল ইউনিয়নে অব্যাহত নদী ভাঙনে উস্তাডাঙ্গী, মৃধাডাঙ্গী ও গোলডাঙ্গির তিনটি গ্রামের প্রায় ৩০০ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এতে কমপক্ষে এক হাজার পরিবার এখন অন্য মানুষের বাড়ির আঙিনায় অথবা সরকারি রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছে। এরমধ্যে পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেছে চরটেপুরাকান্দি মসজিদ ও উস্তাডাঙ্গী স্কুল এবং সরকারের প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক এবং এক হাজার বিঘা ফসলি জমি ও অসংখ্য গাছপালা।
প্রবল হুমকির মুখে আছে চারটি গ্রামের প্রায় ১ হাজার ২০০ বাড়িঘর, সরকারি রাস্তা, স্কুল, মসজিদ, হাসপাতাল, চরটেপুরাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ছোট ছোট বেশ কিছু কালভার্ট-ব্রিজ এবং প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একমাত্র গোলডাঙ্গী ব্রিজটি। হঠাৎ পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
এ ব্যাপারে জেলা সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান মোস্তাক বলেন, আমরা অসহায়। আমরা পারি না মানুষের দুঃখ ও ভাঙনের বিষয় কর্তৃপক্ষকে বলতে। কিন্তু ভাঙন ঠেকানোর ক্ষমতা আমাদের নেই।
এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, খবর পেয়ে শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ৭০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছি। নতুন নতুন যারা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদেরও পর্যায়ক্রমে তালিকা করে সহযোগিতা করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফরিদপুর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, এলাকাগুলো চরের ভেতরে হওয়ায় ভাঙন ঠেকাতে ওইখানে কাজ করার মতো বাজেট আপাতত নেই। এছাড়া করোনার কারণে বাজেট স্বল্পতা রয়েছে আমাদের। তাই এ ব্যাপারে খুব শিগগিরই পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না। পরে বাজেট পাওয়ার প্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনা করবো।