উপজেলার সকল স্কুলে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করে এরইমধ্যে অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবিনা ইয়াসমিন সুমি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুযায়ী জনগণের প্রশাসন প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে সহজীকরণ করেছেন সেবা। এর ফলে উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তর ও বিভাগে সহজে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কভিড-১৯, করোনা মহামারীর কঠিন সময়ে (এপ্রিল-জুন) দিনরাত অসহায় ও দরিদ্র মানুষের দ্বারে দ্বারে সরকারি সহায়তা পৌছে দিয়ে হরিরামপুরের মানুষের কাছে পরিচয় পেয়েছেন-মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করার সময় নিজেও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। শুধুই কি নিজে! ৫ বছরের ছেলে আয়ানও রেহাই পাননি মহামারী করোনার ছোবল থেকে। সঠিক চিকিৎসা ও পরিচর্যায় মা-সন্তান সুস্থ হন। এরপর আবার নেমে যান মানুষের সেবায়। ইউএনও সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, মাঠ প্রশাসনের কাজই হলো সরকারের সেবা তৃণমূলের মানুষের কাছে পৌছানো নিশ্চিত করা। আর তাই প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সেই সেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছানো নিশ্চিত করা আমার কর্তব্য। আর সুদক্ষ জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস স্যারের নির্দেশনায় আমার দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন নীতি বাস্তবায়ন করছি। সাধারণ মানুষের জন্য আমরা যেরকম সেবা সহজীকরণ করেছি। অন্যদিকে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। জেলা প্রশাসক স্যারের যথাযথ তদারকির কারণে এ জেলায় করোনাকালীন কোন ব্যক্তি সরকারি ত্রাণ আত্মসাতের সাহস দেখায়নি।ইলিশ শিকার নিষিদ্ধকালীন সময়েও কঠোর অবস্থান ও যথাযথ তদারকি করে সবার নজর কাড়েন হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিনা ইয়াসমিন সুমি। হরিরামপুর পদ্মা নদী অধ্যুষিত এলাকা। তাই দিন-রাত নিজে উপস্থিত থেকে সহকারী কমিশনার ভূমি-এসি ল্যান্ড ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে নিয়ে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন সাবিনা ইয়াসমিন সুমি। ২০১৯ সালে একুশের বই মেলায় প্রকাশিত হয় সাবিনা ইয়াসমিন সুমির প্রথম কবিতার বই ‘নৈশব্দের সুর’। আর এর মধ্য দিয়ে জাতীয়ভাবে তার কবিত্বের পরিচিতি হলেও তার বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাঙ্খীরা তাকে কবি হিসেবে চেনেন আগে থেকেই। সামাজিক মাধ্যমে তার কবিতা অনেক আগেই দৃষ্টিতে আসে তাদের। নৈশব্দের সুর-কাব্যগ্রন্থ মূল্যায়ন করতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান লেখক, জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, সুমির কবিতায় যে গন্ধ পাচ্ছি তাতে বলতে পারি এ ফুল ফুটতে পারলে বাংলা সাহিত্য অনেক সমৃদ্ধশালী হবে। প্রশাসক নাকি কবি কোন পরিচয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাবিনা ইয়াসমিন সুমি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুর নাসের চৌধুরী স্যার কবি কামাল চৌধুরী হিসেবেই বাংলা একাডেমী পুরস্কার জয় করেছিলেন। একজন মানুষের নানা পরিচয় থাকে। প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমি যেমন মানুষের সেবা করতে চাই। আর তাই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস যাতে তরুণ শিক্ষার্থী বন্ধুরা জানতে পারে তাই উপজেলার সকল স্কুলে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নিশ্চিত করেছি। অন্যদিকে কবি হিসেবেও লেখনীর মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকতে চাই। দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহনের সন্তান সাবিনা ইয়াসমিন সুমি ছোটবেলা থেকেই গান লিখতেন। সরকারি চাকরিজীবী মা-মায়ের ৩ সন্তানই সরকারি কর্মকর্তা। সবার বড় সুমি, মেঝো বোন এনএসআইতে আর ছোট ভাই বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত রয়েছেন। আর স্বামী ওয়ালিউল ইসলাম দোলন ঢাকা জজ আদালতে প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী।