গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে আগামী ২৪/২৫ জুন পর্যন্ত মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বড় কোন বন্যার আশঙ্কা নেই। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছেন সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আজকের বন্যা প্র্বুাভাস থেকে জানা যায়, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কমলেও ধীরে ধীরে বাড়ছে সুনামগঞ্জের হাওরগুলোর পানি। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ২০২২ সালের বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। বানভাসি মানুষের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সুনামগঞ্জ’র দোয়ারা বাজার, ছাতক, জগন্নাথপুর, দিরাই, শাল্লা, তাহিরপুর,জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, বিশ্বম্ভপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্ধী রয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার সাধারণ মানুষ। নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত অনেক পরিবার কাজ কর্ম না থাকায় অর্থকষ্টে পার করছেন মানবেতর জীবন। সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বড়পাড়া,পশ্চিম তেঘরিয়া, হাজীপাড়া, নতুনপাড়া, পূর্ব নতুনপাড়া, জামতলা,জামাইপাড়া, শান্তিবাগ, বিলপাড়, মুহাম্মদপুর, মল্লিকপুর,ওয়েজখালী, হাসন বসত,কালিপুর, পাঠানবাড়ি,নবীনগর, ধোপাখালী এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্ধী। বসত বাড়িতে পানি উঠায় গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষ। পৌর এলাকার তেঘরিয়া মহল্লার কিছু গবাদিপশু রাখা হয়েছে জেলা প্রশাসনের সেবাচত্বরের টিনশেড ঘরে। বন্যায় তলিয়ে গেছে শহরের উকিলপাড়ায় অবস্থিত (বক পয়েন্ট সংলগ্ন) প্রেস ক্লাব ভবন। পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্র ও মূল্যবান কাগজপত্র। বন্যার্ত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মোট ৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে শুকনো খাবার চিড়া,গুড়, বিস্কুট, মোমবাতি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার সেলাই ইত্যাদি। গতকাল থেকে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন সুনামগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক, রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।