নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের গাবুয়া মসজিদ রোড এলাকার আলীমুদ্দিন পাটোয়ারী বাড়ির আমেরিকান প্রবাসী বিধবা আয়েশা খাতুনের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার ও প্রতিকার চেয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বিধবা আয়েশা খাতুন বিগত ১২ বছর আগে একই বাড়ির আবুল বাসার রতন ও জরিনা আফরোজ সহ অন্যান্য ওয়ারিশ থেকে মোট প্রায় ২১ শতক সম্পত্তি ক্রয় করেন। তিনি প্রবাসে থাকায় সম্পত্তিগুলো এতো দিন বিক্রেতাদের দখলে ছিলো। সম্প্রতি তিনি দেশে এসে ক্রয়কৃত সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়ার জন্য দখলকৃত ওয়ারিশদেরকে অনুরোধ করেন। বিক্রেতারা সম্পত্তি বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো বিধবা আয়েশার সীমানার টিন ও কাটা তারের বেড়া উপড়ে ফেলে। এতে বাধা দিলে প্রতিপক্ষ জহিরুল ইসলাম রুবেলসহ একদল সন্ত্রাসী এসে আয়েশা খাতুন সহ তার পরিবারের লোকজনকে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এদিকে বিধবা আয়েশা খাতুন নিজের সম্পত্তিতে টিন ও কাটা তারের বেড়া দেন। এতে জহিরুল ইসলাম রুবেলের হাটার পথ বন্ধ না হলেও প্রতিহিংসা বশত তিনি ভিডিও করে ফেইসবুকে পোস্ট করে আয়েশা খাতুনের বিরুদ্বে ভুল অপপ্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ও আয়েশা খাতুনের সম্মানহানি করে । আয়েশা খাতুন নিজ সম্মানের কথা চিন্তা করে স্থানীয় চেয়াম্যান সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে অবহিত করেন বিষয়টি। অন্যদিকে স্বামীর সম্পত্তির একটা অংশে বেড়া দিতে গেলেও তিনি অপমানের স্বীকার হন এবং বাধা গ্রস্থ হন। দীর্ঘদিনের নিজের ন্যায্য সম্পত্তি বুঝে না পেয়ে হয়রানী এবং অপমানের স্বীকার হচ্ছেন বিধবা এই প্রবাসী নারী। অন্যদিকে এ ঘটনার বিচার ও প্রতিকার চেয়ে বিধবা আয়েশা খাতুন একলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিধবা প্রবাসী আয়েশা খাতুনের স্বজনরা জানায়, জহিরুল ইসলাম রুবেল আমাদের জমিতে জোর করে ভবন নির্মাণ করেছেন। তিনি তাদের চলার পথ এবং রাস্তার জন্য এক ইঞ্চি জমি রাখেননি। তার মা, তার ছোট ভাই এবং পরবর্তীতে তার বড় মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত না লাগানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমরা মানবতার কথা চিন্তা করে সে কথা রেখেছি। এখন তারা সীমান্তের বিরোধিতা করছে এবং আমাদের জমির মাঝখানে হাঁটা পথ ও রাস্তা করতে চায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওতে রুবেল ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়েছেন অথচ আমরা তাদের জন্য যে সাধারণ হাঁটার পথটি খুলে দিয়েছি তা তিনি শেয়ার করেননি। তিনি পুলিশকে ফোন করেন এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে দেখে আমরা তাদের সকলের জন্য সাধারণ হাঁটার রাস্তা এবং রাস্তা ব্যবহার করতে বলেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ডেকে সবার সামনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বললে চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধান করছেন বলে জানান। এতো কিছুর পর রুবেল সহযোগিতা করেন না এবং আমরা সমাধানের কাছাকাছি এলেই অদৃশ্য হয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরাও বুঝতে পেরেছিলেন যে রুবেল শুধু আমাদের হয়রানি করছেন না, পুলিশ সদস্যদের সময় নষ্ট করছেন। রুবেল কিছু দিন পর পর বাড়িতে শোডাউন দিয়ে থাকে। আবার আগের মতই সবার অজান্তেই অদৃশ্য হয়ে যায় এবং কয়েক মাস পর আবার বেরিয়ে আসে। বিধবা প্রবাসী আয়েশা খাতুন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি প্রবাসে ছিলাম। বর্তমানে বিধবা একজন অসহায় নারী। তারা যদি আমার সম্পত্তিগুলো বুঝিয়ে না দেয় বা আমি বুঝে না পাই তাহলে আমরা কি করার আছে। তিনি সম্পত্তি বুঝে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তবে বক্তব্য নিতে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম রুবেলসহ অন্যদের পাওয়া যায়নি। তাদের স্বজনরাও কথা বলতে রাজি হয়নি।একলাশপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাহেদুর রহমান দিপু জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় ভাবে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।