মানিকগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় পানির জন্য চলছে হাহাকার। কোন রকম পানি আসলেও সে পানিতে থাকে ময়লা, আয়রন ও দূর্ঘন্ধ। দিনে রাতে ২৪ ঘন্টায় এক ঘন্টা পানি মিলছে পৌরবাসীর কপালে, আবার কোন কোন দিন তাও মিলে না। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই তীব্র পানি সংকটে পড়েছেন হাজার হাজার পৌরবাসী। কোন কোন এলাকায় পানির সরবরাহ লাইনে মোটেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রিজার্ভ ট্যাংকি গুলো রয়েছে পানি শূন্য। এতে পৌরবাসী পানির কষ্টে দূর্বিসহ দিন কাটাচ্ছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরাতে জানাযায়, গত পাঁচ বছরের শুধু মানিকগঞ্জ শহরে বসবাসরত মানুষের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরন করার লক্ষে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। হিজুলি এলাকার রিয়াদ খান জানান, আগে সারাদিন পানি থাকতো কিš‘ এখন ২৪ ঘন্টায় ১ ঘন্টা পানি মিলছে, কোনো কোনো দিন পানি পাওয়া যায় ১ দিন পরপর। মাস শেষে বিলতো ঠিকই ৩৫০টাকা করে দিতে হয়। এসব সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। না পাওয়ারমত পানি পেয়ে দৈনন্দিন কাজ কর্ম চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। পানি না পেয়ে আর কতদিন এভাবে বিল দিবো? উত্তর সেওতার বাসিন্দা তৌফিক জানান, মাঝখানে ৪ থেকে ৫ দিনতো পানি আসেইনি । মাঝেমধ্যে রাত ৩ টার দিকে আবার মাঝেমাঝে বিকাল ৪টার দিকে অল্প সময়ের জন্য আসে কিন্তু এই পানিতে আমাদের দৈনন্দিন কোন কাজ করতে পারি না।তবে মাসশেষে বিলের টাকা ঠিকই দিতে হয়। পশ্চিম দাশড়া এলাকার রিফাত হাসান জানান, ঠিকমত পানিইতো পাই না! কি বলবো? সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা কোন সময় যে পানি আসে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। পানি আসলেও ১ ঘন্টারও কম সময় পানি থাকে। পশ্চিম দাশড়া এলাকার মো. জাহিদ মোল্লা বলেন, পানির সমস্যায় জীবন অতিষ্ট হয়ে পরেছে। ঠিকতমতো গোসলতো দুরের কথা খাবার পানিটাও দোকান থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মানরা এলাকার অয়ন জানান,আমরা নামে মাত্র পৌরসভার বাসিন্দা। গত দশ বছর যাবত আমরা সাপ্লাই পানি পাই না। পৌরসভার সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুনা আক্তার বলেন, আমরা পানির অভাবে ঠিকমত রান্না, গোসল কোন কিছুই করতে পারি না। গত কয়েকদিন ধরে পানি আসে না বললেই চলে। কয়েকদিন আগে বৃষ্টির সময় পানি এসেছিল দূগন্ধ ময়লাযুক্ত। এভাবে চলতে থাকলে পৌর এলাকায় বসবাস করা সম্ভব নয়। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী মো. কাবুল খান বলেন, কোনো লাইনের পানির চাপ কমে গেলে লিকেজের মাধ্যমে পানির লাইনে বাহিরের পানি মিশে গেলে পানিতে দূর্গন্ধ হতে পারে। আমরা গত পাঁচ বছরে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানির জন্য। আমরা মানিকগঞ্জ শহরের জন্য ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মন্ত্রনালয়ের একটি প্রকল্পের চাহিদা পাঠিয়েছি, আশাকরি প্রকল্পটা পেলে মানিকগঞ্জ শহরের পানির কোনো সমস্যা থাকবে না। জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী গাজী ফাতেমা ফেরদৌস বলেন, পৌরসভা যদি আমাদের জনায়, আমরা টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবো। মানিকগঞ্জ ১নং পৌরসভার মেয়র মো: রমজান আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।