ঢাকা, শুক্রবার, ৩১শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে চা বাগানে ফাগুয়া উৎসব

সবুজ চায়ের বাগান, বাগানে চা জনগোষ্ঠীর বসবাস। চা বাগানে কাজ করায় তারা চা-শ্রমিক নামেই অধিক পরিচিত। তাদের একসঙ্গে বসবাস হলেও ভিন্ন-ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তারা। আলাদা সংস্কৃতি, আলাদা ভাষা। দুর্গা পূজার পরেই ফাগুয়া বা হোলি তাদের প্রধান উৎসব। এ সময় তারা বাগানে কাজ বন্ধ রেখে গায়ে রঙ মেখে নাচে-গানে হোলি উৎসবে মেতে ওঠে। এ উৎসবে যোগ দিতে এক বাগানের শ্রমিকরা আসেন অন্য বাগানে। সপ্তাহব্যাপী এই উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে ওঠে সবুজ চা বাগান।

ফাগুয়া উপলক্ষে শনিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ফুলছড়া চা বাগান মাঠে চা জনগেোষ্ঠীর বহুমাত্রিক সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ফাগুয়া উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবের উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার নীরাজ কুমার জায়সওয়াল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জগতজ্যেতি ধর, ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার প্রমুখ।

সিলেট অঞ্চলে চা জনগোষ্ঠীর ছোট-বড় ৪৫টি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ১৫টি জাতিগোষ্ঠী এই উৎসবে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরে। জাতীয় সংগীতের পর উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন হবিগঞ্জের দেউন্দি চা বাগানের প্রতিক থিয়েটারের শিল্পীরা। সিলেটের লাক্কাতুয়া চা বাগানের ঊষা সংগীত বিদ্যালয়ের শিল্পীরা চা বাগানের গান পরিবেশন করেন। পরে একে একে ভোজপুরী গুরুবন্দনা, হোলি গীত, কমেডি, বিরহ, উরিষ্যার পত্র সওরা, চড়াউয়া নৃত্য, হাড়ি নৃত্য, বাড়াইকরা ঝুমুর নৃত্য, তেলেগুরা ডাল ও কাঠি নৃত্য, মাহাতো কুর্মীরা ঝুমুর নৃত্য ও গড় সম্প্রদায় হোলি গীত পরিবেশন করে। এছাড়া প্রতীক থিয়েটার পরিবেশর করে নাটক।
চা জনগোষ্ঠী ছাড়াও তাদের এই বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে শহর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করে। এ সময় বাসাতে ওড়ে হোলির লাল, নীল, হলুদ আর গোলাপি রঙ। বর্ণিল হয়ে ওঠে সবুজ চা বাগান। সবাই মেতে ওঠে হোলির আনন্দে। সব জাতিগোষ্ঠীর মিলন- মেলায় রূপ নেয় ফুলছড়া চা বাগানের মাঠ।

ফাগুয়া উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও কালিঘাট ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান প্রাণেশ গোয়ালা বলেন, চা বাগানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী বসবার করছে। তাদের সংস্কৃতি, ভাষা ও কৃষ্টি আলাদা। এই সবকিছুই কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা এগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Tweet about this on Twitter
Twitter
Email this to someone
email
Print this page
Print
Pin on Pinterest
Pinterest

দৈনিক নবচেতনার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন