বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যয়ের ৭১ শতাংশ পরিবার বহন করে বলে এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে শিক্ষা ব্যয়ের ৫৭ শতাংশ বহন করে পরিবার। নেপালে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবারের ব্যয় ৬৩ শতাংশ এবং কারিগরি-বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ৭৫ শতাংশ ব্যয় করে পরিবার। যেখানে সরকারি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে এই ব্যয় ৮ শতাংশ।
ইউনেস্কো গ্লোবাল এডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণা করেছে। এতে সহযোগী হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক। প্রতিবেদনটি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রকাশ করা হচ্ছে।
এই গবেষণা প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, দুটি প্রধান শহরে শীর্ষ ২৫ শতাংশ পরিবারের মাসিক ফি প্রদানের হার নিম্ন ২৫ শতাংশ পরিবারের তুলনায় চার থেকে আট গুণ বেশি।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে শীর্ষ ২০ শতাংশ পরিবার নিচের ২০ শতাংশ পরিবারের তুলনায় সরকারি, বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন সব রকম স্কুলে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন স্কুলে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করে পরিবার।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ১২ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় করে এবং ৬ শতাংশ পরিবার স্কুলের ফি মেটাতে ঋণ করে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণ করে বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়াশোনার খরচ মেটায়।
ভুটান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণকারীদেরকে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বৃদ্ধি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি’র ওপর কর আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। ফলস্বরূপ কিছু সিদ্ধান্তের পরিবর্তনও হয়েছিল।
এই প্রতিবেদনের জন্য করা একটি জরিপে দেখা যায়, ভারতের ১ হাজার ৫০টি কম খরচের বেসরকারি স্কুলের মধ্যে ১ হাজারটি স্কুল শুধুমাত্র ফির উপর নির্ভর করে চলে।
অপরদিকে আফগানিস্তান, ভারত এবং নেপালের শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ফি’র উপর নির্ভরতা এবং সরকারি তহবিলের অভাবকে তাদের কর্মসূচির উন্নয়নে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. মঞ্জুর আহমেদ, ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের প্রধান নির্বাহী রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।